চলতি বছরের জুলাই মাসে ছড়ানো ভুয়া তথ্যসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের জুলাই মাসে ২৯৬টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটি গত জুন মাসেও ভুয়া তথ্যের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তুলনামূলক বিবেচনায়, জুন মাসের চেয়ে জুলাইয়ে ভুয়া তথ্য কম ছড়িয়েছে বলে অভিহিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন মাসে ৩২৪টি যাচাইকৃত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছিল, যা জুলাই মাসে কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২৯৬ এ। তবে জুনের মতোই জুলাই মাসেও অধিকাংশ ভুয়া তথ্য ছিল রাজনীতিবিষয়ক, যা জুনে ছিল ৭৮ শতাংশ (২৫৩টি) এবং জুলাইয়ে এসে দাঁড়িয়েছে ৭৪ শতাংশে (২২০টি)।
এ ছাড়া সিজিএস প্রতিটি বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্যের ভুক্তভোগী বা টার্গেট শনাক্ত করেছে। সে অনুযায়ী জুলাই মাসে ভুয়া তথ্যের মূল ভুক্তভোগী বা টার্গেট ছিল দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা, যা ছিল ৬৬টি। দ্বিতীয় স্থানে আছে রাজনৈতিক দল (৬৫টি)। ভুয়া তথ্যের আরও লক্ষ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (৪১টি), সেলিব্রিটি (২৩টি), ধর্ম (১২), সরকারি প্রতিষ্ঠান (১৩টি), অন্তর্বর্তী সরকার (১০টি), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (৩টি) ও ধর্মীয় ব্যক্তি (২টি)। এ ছাড়া অনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ছিল ৬১টি, যা কোনো নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে করা হয়নি বরং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি তৈরি করার জন্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, যেখানে ২৯৬টি ঘটনার মধ্যে ২৮৯টি ঘটেছে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস ও এক্স (টুইটার)-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে। বাকি ৭টি ভুয়া তথ্য অনলাইন নিউজ পোর্টালে ছড়ানো হয়েছে।
সিজিএস ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রতিদিন দেশে কী পরিমাণ ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে তা তথ্য-উপাত্তসহ ট্র্যাকিং করছে। পাশাপাশি শনাক্তকৃত তথ্য ও উপাত্তের ওপর সিজিএস মাসিক একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে আসছে। সিজিএস’র তৈরিকৃত ভুয়া তথ্যের পরিসংখ্যান ও মাসিক প্রতিবেদনগুলো পাওয়া যাবে দেশের একমাত্র ভুয়া তথ্য ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট www.factcheckinghub.com থেকে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে সিজিএস’র প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিষয়ে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বহুগুণে বেড়েছে, এটি ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিজিএস আগে থেকেই ভুয়া তথ্য প্রতিরোধে কাজ করে আসছে এবং সামনের দিনগুলোতেও কাজ করবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে এ বিষয়ে সরকার ও সব রাজনৈতিক দলগুলোকেও ঐক্যবদ্ধ ও আলাদাভাবে কাজ করতে হবে। ’
টিআর/আরবি