ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সমতলের আদিবাসীদের ভূমি রক্ষায় পৃথক কমিশনের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
সমতলের আদিবাসীদের ভূমি রক্ষায় পৃথক কমিশনের দাবি আ ক ম মোজাম্মেল হক

ঢাকা: সমতল আদিবাসীদের দখল হওয়া ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি তাদের ভূমি রক্ষায় পৃথক ভূমি কমিশনের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।
 
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ফার্মগেট এলাকায় আদিবাসীদের নিয়ে ‘ন্যাশনাল শেয়ারিং অব ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’ শীর্ষক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়।

সেমিনারের আয়োজনে ছিল আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস।
 
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, সমতলের আদিবাসীদের ভূমি উদ্ধার করা প্রচলিত আইনে সম্ভব নয়। তাদের ভূমি অধিকার ফিরে পেতে পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো আইন হওয়া উচিত।
 
প্রথাগত বিচার ব্যবস্থা অগ্রাহ্য না করে প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদিবাসীদের জীবন যাপন করা উচিত বলেও এ সময় মত প্রকাশ করেন তিনি।
 
মন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের চেয়ে বেশি আদিবাসী বসবাস করেন সমতলে। কিন্তু সমতলের আদিবাসীরা ভূমি অধিকার থেকে বঞ্চিত। দলিলপত্র না থাকায় জমি রেকর্ডের সময়ে সরকারি বিধান মতো তারা দলিলপত্র দেখাতে পারেননি। সেই সুযোগটি ভূমি দখলদারেরা নিয়ে ভূমি দখল করেছে। অনেক ক্ষেত্রে কাগজপত্র না থাকা এবং অজ্ঞতার কারণে তারা ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
 
সমতলের আদিবাসীদের ভূমি রক্ষায় পৃথক ভূমি কমিশনের গুরুত্ব তুলে ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান র ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী বলেন, পাহাড়ের আদিবাসীদের সমস্যা ও সমতল আদিবাসীদের সমস্যার মধ্যে পার্থক্য ভিন্ন। সমতলের আদিবাসীদের জমির কাগজপত্র নেই। এজন্য দরকার ভূমি কমিশন।
 
তিনি বলেন, এই দাবিটি সোচ্চার হওয়া উচিত। তাদের এ দাবির সমর্থনে পত্রপত্রিকা ও সুশীল সমাজসহ সংশ্লিষ্টদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। পাশাপাশি আদিবাসীদের সচেতনতাও বাড়াতে হবে।
 
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে আদিবাসী সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, কেবল কাগজের মালিকানাই ভূমির অধিকারের নিশ্চয়তা দেয় না। তাই সরকারকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।

বিশ্বের আদিবাসীদের সঙ্কটের সঙ্গে বাংলাদেশের আদিবাসীদের সঙ্কটের কোনো মিল নেই উল্লেখ করে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বাংলাদেশের আদিবাসীদের সমস্যাগুলো পৃথকভাবে দেখা দরকার। সংবিধানে আদিবাসীদের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জাতি গোষ্ঠী হিসেবে লেখা আছে। এই ক্ষুদ্র শব্দটার মাধ্যমে তাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই এ ক্ষুদ্র শব্দটি সংবিধান থেকে বাদ দেয়া উচিত।
 
আলোচকের বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত বলেন, আদিবাসীদের সমস্যা কেবল তাদের নয়, এটি পুরো জাতির সমস্যা। সাংবিধানিক ধারায় বাংলাদেশ পরিচালিত হলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আমরা আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারিনি।
 
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএনডিপির কনসালটেন্ট ম্যাবেলিন ম্যাসি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্টের ম্যানেজার ইভস ডেল মুনাকৌ প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
টিএইচ/একে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।