অস্বাস্থ্যকর হলেও নিজেদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করতেই গড়ে তুলেছেন ছোট দোকান। সীমিত আয়ের মানুষেরাই এসব দোকানের ক্রেতা।
শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার জোরবাড়িয়া গ্রামে দেখা গেছে এ দৃশ্য।
শীতের আমেজ এখন প্রকৃতিতে। গ্রাম-গঞ্জে সন্ধ্যার পর পরই শীত আর কুয়াশায় একাকার। শীতকালের ধর্মসভাকে ঘিরেই এসব ব্যবসায়ীরা খাবারের অস্থায়ী দোকানগুলো দেন। সভা শেষ হতেই দোকান গুটিয়ে বাড়ি ফেরেন তারা। পোড়া পাম তেলে জিলাপি ভাজছিলেন ভালুকজান এলাকার মোফাজ্জল হোসেন। সয়াবিন তেল একশ’ টাকা লিটার হওয়ায় জিলাপি ভাজতে পাম তেল ব্যবহার করেন তিনি। ভাজা শেষ হলে আবার সেই তেলই গ্যালনে ঢালেন। মোফাজ্জল বলেন, ‘পাম তেল ছাড়া জিলাপি হয় না। ভেজাল হলে পাবলিক তো আর খাইতো না’।
তিনি জানান, ‘প্রতিটি ধর্মীয় সভায় ৬০ টাকা কেজি দরে আট থেকে দশ হাজার টাকার জিলাপি বিক্রি হয়। এর মধ্যে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লাভ থাকে’।
রং মেশানো প্রতি পিস পাপড় পাঁচ টাকা দামে বিক্রি করছিলেন হাসপাতাল রোড এলাকার বাসিন্দা বাদল হোসেন। গরমের সময় পেশা বদল করেন। গ্রামে ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করেন।
তিনি জানান, ময়দা দিয়ে নিজেরাই পাপড় তৈরি করেন। এরপর কাঁঠালি রঙ মিশিয়ে পাম তেলে ভাজা হয় পাপড়।
এ ক্ষুদে ব্যবসায়ী স্বীকার করেন, নতুন পাম তেলের সঙ্গে পোড়া পাম তেল মাঝে-মধ্যে ব্যবহার করা হয়। তবে এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই বাদলের।
ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে ছয় সদস্যের সংসারের হাল ধরেছেন রফিকুল ইসলাম। তার দোকানে মিলছে তিলের তক্তি, বুট, খুরমা, বাদাম দানা।
রফিকুল জানান, প্রতি কেজি বাদাম দানা দেড়শ’ টাকা ও তিলের তক্তি ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। স্কুলছাত্র হাফেজ আলীর মতে, ‘মচমচা তক্তি খেতে মজা। দামে সস্তা হলেও যুগের পর যুগ এ খাবারগুলোই সবাই খেয়ে আসছেন’।
শিশুদের খেলনা বিক্রেতা পলাশতলী গ্রামের আলম (৩৫) জানান, গ্রামের ধর্মসভাকে ঘিরে দোকানে শিশুদের ভিড় থাকে। বিক্রির টাকা দিয়েই চলে সংসারের খরচ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৭
এমএএএম/এএটি/এএসআর