বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে নগর ভবনে গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকা হকারমুক্ত করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে হকার নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানান তারা।
সভায় হলিডে মার্কেটের বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেন হকার নেতারা।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবদুল ওয়াহাব ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ হকার ফেডারেশনের সভাপতি এম এ কাশেম, বাংলাদেশ ছিন্নমূল হকার লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন মজুমদার, জাতীয় হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরিফ চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় হকার্স লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম প্রমুখ।
হকার নেতারা বলেন, রাস্তা থেকে হকারদের উচ্ছেদ করলে তারা কোথায় যাবেন? আগের তাদের পুনর্বাসন করুন, পরে উচ্ছেদ করুন।
বাংলাদেশ হকার্স ফেড়ারেশনের সভাপতি এম এ কাশেম বলেন, ‘প্রতিটি ফুটপাতে একজন করে লাইনম্যান চাঁদাবাজ থাকেন। একটা ফুটপাতে ১০০ জন থাকলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন একজন লাইনম্যান নামধারী চাঁদাবাজ। এ লাইনম্যানকে নিয়ন্ত্রণ করেন অসাধু প্রশাসনের লোক ও অসাধু রাজনীতিবিদরা। চাঁদাবাজরা দোকান প্রতি দুই লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন’।
তিনি বলেন, ‘হলিডে মার্কেট নয়, আমরা বিভিন্ন মার্কেট যেদিন বন্ধ থাকে, ওইদিন ওই এলাকায় বসতে চাই। আমাদের তালিকাভুক্ত হকারদের একটি পরিচয়পত্র দেওয়া হোক। আমরা নগর ভবনেই বন্ধের দিনে বসতে চাই। চাঁদা দিলে নগর ভবনকেই দেবো। এভাবে যেসব মার্কেট যেদিন বন্ধ থাকবে, সেদিন ওখানে হকারদের বসার ব্যবস্থা করে দিন’।
লাইনম্যানের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা লাইনম্যান উঠিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু যেখানে বিনা পয়সায় ব্যবসা করার সুযোগ থাকে, সেখানে এ ধরনের অসাধু লোক তৈরি হবেই। তাই হকারদের একটা নীতিমালায় আনা দরকার। তাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে’।
বাংলাদেশ জাতীয় হকার্স লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা মহানগরে ৮ থেকে ৯ লাখ হকার রয়েছেন। দক্ষিণে এ সংখ্যা ৫ থেকে ৬ লাখ। এখানে সবাই গরিব, নিরীহ। তাদের সামান্য আয়। আমরাও চাই, রাস্তা হকারমুক্ত থাকুক। তবে সরকারি যেসব জায়গা রয়েছে, সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক। আগে হকারদের পরিচয়পত্র দেওয়া হোক’।
তিনি বলেন, ‘আজ হকারদের একটি জায়গায় বসতে এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা দিতে হয়। তারা কারা? তাদের চিহ্নিত করুন। হকার উচ্ছেদ করা যাবে না। তারা কোথায় যাবেন? তারা মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঢাকায় থাকেন’।
জাতীয় হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘হকারদের পুনর্বাসন করতে হবে। হলিডে মার্কেট নিয়ে হকারদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। হকাররা হলিডে মার্কেটে গেলে ফুটপাতে বসতে পারবেন কি-না?
তিনি বলেন, হকারদের পরিকল্পনামাফিক বসাতে হবে। এর জন্য একটি নীতিমালা থাকা দরকার। হকারদের কার্ড দিতে হবে। তারা সিটি কর্পোরেশন থেকে কার্ড নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বসবেন। এজন্য আইন করতে হবে। যদি আইন তৈরি করা না যায়, তাহলে দিন দিন হকার বাড়বে’।
মতবিনিময় সভায় হকার নেতারা বলেন, ‘সরকার বা সিটি কর্পোরেশন সপ্তাহে একদিন নির্দিষ্ট ৫টি স্থানে হলিডে মার্কেট চালু করেছে। এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক। কিন্তু সপ্তাহের বাকি ৬টি দিন আমরা কি করবো? কি খাবো? হকারদের তো পরিবার রয়েছে। এজন্য তাদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে’।
** গুলিস্তানে দিনের বেলা বসতে পারবে না হকাররা
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৭
এসএম/এএসআর