ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুয়াশায় মোড়ানো আলুর জমি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
কুয়াশায় মোড়ানো আলুর জমি! তীব্র শীত আর কুয়াশার দাপট। কুয়াশা দীর্ঘ মেয়াদি হলে আলুর গাছ লেটব্লাইট রোগে আক্রান্ত হবে। ছবি: কাওছার উল্লাহ আরিফ

বগুড়া: প্রত্যেক বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় রবি মৌসুম। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। আর এ মৌসুমের অন্যতম ফসল বিভিন্নজাতের আলু। কিন্তু এ মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনেকটাই প্রতিকূলে চলে যায় আলু চাষীদের।

অসময়ে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের জমিতে জমে যায় পানি। ধান কাটা ও মাড়াই করতে লেগে যায় বাড়তি সময়।

এরপর সেই জমির পানি শুকাতে কেটে যায় আরও সময়। এভাবে কেটে যায় প্রায় এক থেকে দেড় মাস। পেরিয়ে যায় আলু লাগানোর উপযুক্ত সময়।

আলু লাগানোর শেষ সময় পুরো নভেম্বর পেরোলেও ক্ষান্ত দেননি চাষীরা। সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়েই জমি প্রস্তুত ও আলু লাগানোর কাজ চালিয়ে যান পুরোদস্তর। তবু বগুড়ায় এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমপক্ষে ৮ হাজার হেক্টর কম জমিতে চাষ হয়েছে আলু।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মন্ডলের সঙ্গে বাংলানিউজের এ-প্রতিবেদকের আলাপকালে আলু চাষ সম্পর্কে এমনই তথ্য উঠে আসে।

তিনি জানান, চলতি রবি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের নানা ধরনের তৎপরতার পরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে বেশির ভাগ আলু শিবগঞ্জ উপজেলায় চাষ হয়। পরের স্থানে রয়েছে বগুড়া সদর, শেরপুর, নন্দীগ্রাম, কাহালু ও গাবতলী উপজেলার নাম। এছাড়া বাকি উপজেলায় কিছু জমিতে আলু চাষ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে চলছে তীব্র শৈত্য প্রবাহ আর ঘন কুয়াশার দাপট।

এ প্রসঙ্গে কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, শৈত্য প্রবাহে আলুর তেমন একটা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে কুয়াশা দীর্ঘ মেয়াদী হলে আলুর গাছ লেটব্লাইট রোগে আক্রান্ত হবে। এতে গাছের পাতা লালচে বর্ণ ধারণ করবে। পাতা ও ডগায় পচন ধরে গাছগুলো নষ্ট হবে। তবে এখনও অবধি কোথাও থেকে ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য আসেনি বলেও দাবি করেন কৃষি বিভাগের উর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকে দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার আলুর ক্ষেত কুয়াশায় মোড়ানো থাকছে। তীব্র শীতের দাপট উপেক্ষা করেই আলু চাষীরা ক্ষেত পরিচর্যায় চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন। যতটা সম্ভব গায়ে শীতের পোশাক জড়িয়ে কোদাল হাতে ভোর হতেই কৃষক ছুটে চলছেন নিজ নিজ জমিতে। সঙ্গে থাকছে শ্রমিক। কোদাল মারছেন আর আলুর আল ঠিক করছেন তারা। তবে বর্তমান আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত আলুচাষীরা।

আলুচাষী আবু সাঈদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রত্যেক বছর প্রায় ১০ বিঘা জমিতে আলু লাগাই। এবার আবহাওয়ার কারণে মাত্র ৪ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। নিয়ম অনুযায়ি শুরু থেকেই সবকিছু করছি। কিন্তু তীব্র শীত ও কুয়াশা ভীষণ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে’।

আব্দুল হান্নান নামের আরেক আলুচাষী বাংলানিউজকে বলেন, ‘একে তো আলু লাগাতে দেরি হয়ে গেছে, তার মধ্যে আবার চলছে প্রচণ্ড শীতের দাপট। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কুয়াশা। সব মিলে এবারের আলু নিয়ে খুব টেনশনে আছি।
বাংলাদেশ সময়:০৭১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
এমবিএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।