ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যশোর রোডের গাছ না কাটার সিদ্ধান্তে স্বস্তি

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
যশোর রোডের গাছ না কাটার সিদ্ধান্তে স্বস্তি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত যশোর রোড

যশোর: যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটারে শতবর্ষী গাছ কাটার ওপর আদালতের ছয় মাসের স্থগিতাদেশের সপ্তাহ পার না হতেই গাছগুলো না কেটে মহাসড়কটি পুনর্নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

মহাসড়কটির জীর্ণদশা দূর করতে পুনর্নির্মাণের জন্য প্রথম পর্যায়ে ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এতে পরিবেশবাদী এবং গাছ রক্ষার আন্দোলনকারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ভারতের পেট্রাপোলে যেভাবে সড়কে গাছ রেখে সম্প্রসারণ করা হয়েছে তা থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে এই সড়ক সম্প্রসারণ করা হবে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশোধিত এ প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু করবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। তবে আপাতত ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কটি মেরামত ও মজবুত করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য চলতি বছর ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ৬ জানুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে তিনজন সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসকসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় যশোর রোড (যশোর-বেনাপোল) মহাসড়ক প্রশস্তকরণে ২ হাজার ৩১২টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরমধ্যে ১৭৪ বছরের পুরনো গাছও রয়েছে।  

মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিস্মারক হিসেবেও গাছগুলোর সাথে আবেগ জড়িয়ে আছে। সভায় গাছ কাটার ব্যাপারে উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কেউ দ্বিমত করেননি।

কিন্তু এরপরপরই পরিবেশবাদী ও স্থানীয়রা গাছ রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। গাছ কাটার পক্ষেও কর্মসূচি পালন করে কয়েকটি সংগঠন। বিষয়টি আদালতে গড়ালে গত ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট শতবর্ষী গাছগুলো না কাটার জন্য ছয় মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে সড়ক বিভাগ গাছ না কেটে আপাতত সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে, ঐতিহাসিক যশোর রোডের শতবর্ষী গাছগুলো স্থায়ীভাবে রক্ষা পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আন্দোলনকারীরা সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সাইবুর রহমান মোল্যা বাংলানিউজকে বলেন, গাছগুলো রেখে সড়ক প্রশস্তকরণ খুবই ভালো উদ্যোগ, গাছ কাটলে পরিবেশের বিরূপ প্রতক্রিয়ার যে প্রভাব পড়তো, তা থেকে রক্ষা পাবে এ অঞ্চালের মানুষ।  

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও গাছ রক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ইকবাল কবীর জাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, অবশ্যই আমরা উন্নয়নের পক্ষে, তবে পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়ন আমরা চাই না।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
ইউজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।