হত্যাকাণ্ডের এক মাস ২১ দিন পরে ভাড়াটে খুনি রবিউলকে গ্রেফতার করার পর বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ। তবে গ্রেফতারের পরই তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে সেখানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রবিউল নিহত হন বলে জানায় পুলিশ।
যদিও এর আগে পুলিশের অভিযানিক দলের কাছে জনপ্রিয় চেয়ারম্যান নান্টুকে হত্যার কথা স্বীকার করে যান রবিউল।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে বরিশালের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নান্টুকে হত্যার ঘটনায় সর্বশেষ আটজনসহ এ পর্যন্ত ২০ জনের মতো আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে ৬৪ ধারাতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানা যায়, চেয়ারম্যানকে হত্যাকারী হলেন- মাদারীপুরের কালকিনী উপজেলার কুকরিরচর এলাকার লাল চাঁনের ছেলে রবিউল।
এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রবিউলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে তৎপরতা শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার (১২ নভেম্বর) রাত ৮ টার দিকে মাদারীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে উজিরপুর মডেল থানার উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়। তবে পথে ঘটনার বিষয়ে গ্রেফতার রবিউল জানান, চেয়ারম্যান নান্টুকে তিনি নিজ হাতে পিস্তল দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। পাশাপাশি ঘটনার সময় তার কাছে আরও অস্ত্র ছিল। যা জল্লা ইউনিয়ন এলাকায়ই রয়েছে।
পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাকে নিয়ে জল্লা ইউনিয়নের উদ্দেশে যাত্রা করা হয়। একপর্যায়ে রাত পৌনে ৩টা নাগাদ ইউনিয়নের পীরেরপাড় ফুলতলা এলাকায় পৌঁছালে রবিউলের সঙ্গীরা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছোড়েন। এতে পুলিশও পাল্টা গুলি শুরু করে। এর মধ্যে সুযোগ পেয়ে রবিউল পালিয়ে যাওয়ার জন্য দৌড় দেন।
তিনি আরও বলেন, গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরে তাদের নিয়ে পুলিশ সদস্যরা এলাকাটিতে তল্লাশি চালিয়ে রবিউলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি তার সঙ্গীদের ফেলে যাওয়া একটি পিস্তল, তিন রাউল গুলি ও তিনটি রামদা উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, রবিউলকে নিয়ে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সুপার জানান, রবিউল মূলত ভারাটে খুনি। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
তবে কারা রবিউলকে ভাড়া করেছেন, তাদের বিষয়ে তদন্তের স্বার্থে এ মুহুর্তে কিছু বলতে না চেয়ে পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। আর মামলার সকল অগ্রগতি জানানো হবে। তবে যেহেতু মামলাটি আদালতে রয়েছে, তাই সে বিষয়েও চিন্তা করতে হবে।
চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯ টার দিকে জল্লা ইউনিয়নের কারফা বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুলি করে হত্যা করা হয় চেয়ারম্যান নান্টুকে।
এ ঘটনার পরের দিন নান্টুর বাবা মুক্তিযোদ্ধা সুকলাল হালদার স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তালুকদার ইউনুসের পিএস আবু সাঈদ রাঢ়ীসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৮
এমএস/টিএ