ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু আর নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু আর নেই

ঢাকা: চলে গেলেন বায়ান্নর ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু (ইন্নালিলাহি... রাজিউন)। 

মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে রওশন আরা বাচ্চুর মেয়ে তাহমিদা বাচ্চু বলেন, মা বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল। অসুস্থ অবস্থায় তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে তিনি মারা যান।

ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ আরও অনেকে।

এদিকে রওশন আরা বাচ্চুর প্রতি নাগরিক শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে তার মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আনা হয়।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় রওশন আরা বাচ্চু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের (ঢাবি) ছাত্রী। ২১ ফেব্রুয়ারি যেসব ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে ছিলেন, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি জনমত সমর্থনের জন্যও ব্যাপক তৎপরতা চালান।  

রওশন আরা বাচ্চুর মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি।  ছবি: বাংলানিউজ

তিনিই সেসময় ইডেন মহিলা কলেজ এবং বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সংগঠিত করে আমতলার সমাবেশস্থলে নিয়ে আসেন। সেখান থেকেই ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন। তারা ব্যারিকেড টপকিয়ে মিছিল নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করেন।  

কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে ব্যারিকেড টপকানো বেশ কঠিন ছিল। রওশন আরা বাচ্চু তার দলের সবাইকে নিয়ে পুলিশের তৈরি ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলেন। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে দেয়। এতে অনেকেই হতাহত হন। সেসময় রওশন আরা বাচ্চুও আহত হয়েছিলেন।

রওশন আরা বাচ্চু ১৯৩২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সিলেটের কুলাউড়া থানার উছলাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এ এম আরেফ আলী ও মায়ের নাম মনিরুন্নেসা খাতুন।  

১৯৪৭ সালে পিরোজপুর গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৪৮ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন রওশন আরা। এরপর ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে অনার্স করে ১৯৬৫ সালে বিএড ও ১৯৭৪ সালে ইতিহাসে এমএ করেন।  

রওশন আরা বাচ্চু সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও উইম্যান স্টুডেন্টস রেসিডেন্সের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি গণতান্ত্রিক প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্টের সঙ্গে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন।

যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও। যার মধ্যে রয়েছে- ঢাকার আনন্দময়ী স্কুল, লিটন অ্যাঞ্জেলস, আজিমপুর গার্লস স্কুল (খন্ডকালীন), নজরুল একাডেমি, কাকলি হাই স্কুল এবং আলেমা একাডেমিতে। সবশেষে ২০০০ সালে বিএড কলেজের অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯/আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা
ডিএন/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।