ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘৯ম বেতন কমিশন’ গঠনে চিঠি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘৯ম বেতন কমিশন’ গঠনে চিঠি

ঢাকা: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তিনটি ‘বিশেষ ইনক্রিমেন্ট’ ও ‘নবম বেতন কমিশন’ গঠনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অর্থ সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। 

সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে গত ২১ নভেম্বর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এ আবেদন জানায় বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি।  

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ ডিসেম্বর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অর্থ সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

ইতোমধ্যে করণীয় ঠিক করতে এ বিষয়ে বিশ্লেষণও শুরু করেছে অর্থ বিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।  

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বশেষ জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণার প্রায় ৫ বছর হতে চলছে। এরই মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী চাপে নিষ্পেষিত সরকারি চাকরিজীবীরা।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান ও ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে ২০১৫ সালে জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ বেতন-ভাতা নির্ধারণ-সংক্রান্ত একটি মন্ত্রিসভা কমিটি গঠনের জন্যও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৭ সালের ৯ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে (সমন্বয় ও সংস্কার) আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।

ওই কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, ভবিষ্যৎ বেতন-ভাতা নির্ধারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি তাদের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে এবং মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয়করণের উপায় নির্ধারণের লক্ষ্যে সার্বিক বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি সুচিন্তিত সুপারিশমালা প্রণয়ন করবে। এ কমিটি ২০১৮ সালের শেষ দিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো বিষয়ে একটি সুপারিশমালা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এ প্রতিবেদনের ওপর কয়েকটি বৈঠকও করে অর্থ বিভাগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেতন বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এ পরিপ্রেক্ষিতে সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি জানায়, জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ জারি হওয়ার পর প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হতে চলছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, কল্যাণ ফান্ড, যৌথবীমা, পরিবহন খরচসহ অন্যান্য বিল কয়েকগুণ বেড়েছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেসরকারি বাসাভাড়া, পরিবহন, চিকিৎসা খরচ, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অনেক গুণ বেড়েছে। এছাড়া বর্তমান বেতনস্কেলে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড সুবিধা না থাকায় নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারীদের সংসার পরিচালনা করতে আরও বেশি হিমশিম খেতে হচ্ছে।  

এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও পরিবর্ধনের বিষয় পর্যালোচনা-সংক্রান্ত কমিটির সুপারিশমালা ও ২০১৫ কার্যকর হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি জীবনযাত্রার ব্যয় ও মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি বিবেচনা করে আপাতত তিনটি ‘বিশেষ ইনক্রিমেন্ট’ ও ‘নবম বেতন কমিশন’ গঠনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সমিতি।

বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকার তাদের জীবনযাত্রার মান, আয়-ব্যয়ের সঙ্গতি ও মুদ্রাস্ফীতিসহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় বেতন কমিশন কার্যকরের এক বা দুই বছর আগে বিভিন্ন সময় মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়েছে।  

এরই ধারাবাহিকতায় অর্থ বিভাগ ১৯৮২, ২০০৩, ২০০৮ ও ২০১৩ সালে সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গড়ে ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯ 
জিসিজি/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।