ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজাকারের তালিকা নতুন করে যাচাই-বাছাই করা দরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
রাজাকারের তালিকা নতুন করে যাচাই-বাছাই করা দরকার

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের গবেষকদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত তালিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে নানা খবর আসতে শুরু করে। এ তালিকায় ভাতাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নামও পাওয়া গেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলানিউজকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় শাহরিয়ার কবির এ মন্তব্য করেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, রাজাকারের তালিকা বা যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রকাশের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় এটি সম্পন্ন করা হয়েছে তা নিয়ে সমালোচনা আছে। তারা আমলা দিয়ে এ তালিকা প্রণয়ন করেছেন। এটা আমলাদের কাজ নয়। এর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের গবেষক বা বিশেষজ্ঞ কাউকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। যার ফলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় এ তালিকা নতুন করে যাচাই-বাছাই করে আবারও প্রকাশ করতে হবে এবং এ কাজটি সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে।

তিনি বলেন, বলা হচ্ছে, রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এখানে আল-বদর, আল-শামস্, আল-মুজাহিদদেরও নাম রয়েছে। এগুলো আলাদাভাবে করার দরকার ছিল। সে সঙ্গে শুধুমাত্র নাম প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের সার্বিক পরিচয় এবং অপরাধের ধরণ সম্পর্কে কোনো কথা নেই।

তিনি আরও বলেন, এ তালিকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর নাম এসেছে। এটা বিষ্ময়কর। হতে পারে এ নামে অন্য কেউ সে সময় যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। যেহেতু তালিকায় কোনো কিছু বিস্তারিত নেই, সেহেতু এ বিতর্কের সৃষ্টি হচ্ছে।

রাজাকার পাকিস্তানিদের নিজস্ব বাহিনী ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানকার আনসার বাহিনীর মতো একাত্তরে রাজাকার পাকিস্তানের একটি বাহিনী ছিলো। তারা বেতনভোগী ছিলো। তারা প্রত্যেকেই কিন্তু যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। অনেকেই সে সময় প্রাণের ভয়ে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। আবার সবাই ধর্ষণ-হত্যার সঙ্গে যুক্ত নাও হতে পারেন। অনেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতাও করেছেন। ফলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী নামের তালিকা হওয়া উচিত।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক শাহরিয়ার কবির বলেন, নিয়াজীর বর্ণনা অনুযায়ী রাজাকারের সংখ্যা ছিলো ৫০০ হাজার। আরও ৫০ হাজার সদস্য তৈরির কাজ চলছিল। এগুলো তার আত্মজীবনীতে রয়েছে। সেসব বিষয় কিন্তু মাথায় রাখা হয়নি। আমার মতে, এটা বঙ্গবন্ধুর আমলে করা ১১ হাজারের তালিকা নতুন করে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাদের কোনো পরিশ্রম নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি জানান, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির বিভিন্ন শাখাকে ইতোমধ্যেই এ তালিকার বিষয় তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে আগামী ২০ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটি তাদের তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
ডিএন/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।