ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

টাকার অভাবে চিকিৎসা অনিশ্চিত জোড়া লাগানো দুই বোনের

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
টাকার অভাবে চিকিৎসা অনিশ্চিত জোড়া লাগানো দুই বোনের লাবিবা ও লামিসা

নীলফামারী: টাকার অভাবে জন্মের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও অস্ত্রোপচার করা যায়নি কোমর জোড়া লাগানো দুই বোন লাবিবা ও লামিসার। এ কারণে দুই বোনকে সারাক্ষণই একসঙ্গে থাকতে হচ্ছে।

অর্থাভাবে সন্তানদের চিকিৎসা করাতে না পেরে নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরলেন লাবিবা-লামিসার দরিদ্র বাবা লাল মিয়া।  

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা লাল মিয়া রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন।

তিনি জানান, গত বছরের এপ্রিলে তার স্ত্রী মনুফা বেগম যমজ মেয়ের জন্ম দেন। কিন্তু মেয়ে দু’টির শরীরের কোমর জোড়া লাগানো। ফলে অস্ত্রোপচার করে তাদের আলাদা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিতে রাজধানীতে গিয়ে জেনে এসেছেন যে এর জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বলেছেন, সঠিকভাবে অস্ত্রোপচার করাতে পারলে, মেয়ে দু’টিকে আলাদা করা যাবে। কিন্তু তার জন্য তো অনেক টাকার প্রয়োজন, যা আমাদের কাছে নেই। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ চিকিৎসায় খরচ হবে প্রায় ছয়/সাত লাখ টাকা। এত টাকা পাবো কোথায়? 

লাবিবা-লামিসার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন লাল মিয়া ও তার স্ত্রী মনুফা। তারা তাদের যমজ মেয়েদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

শিশুদের মা মনুফা বেগম বলেন, চার হাত, পা, মাথা সব আলাদা থাকলেও মেয়ে দু’টির কোমর জোড়া লাগানো। তাদের একজনের সঙ্গে অন্যজনের কোনো কাজের মিল নেই। একজন দাঁড়ালে অন্যজন বসতে চায়। একজন ঘুমালে অন্যজনের কান্নায় ঘুম ভেঙে যায়। জন্মের পরই তাদের মলদ্বার না থাকায় অস্ত্রপচার করে পেটের মধ্যে পৃথকভাবে মলদ্বার করা হয়েছে। এখন তাদের কোমরের জোড়ার চিকিৎসা করা দরকার।

জলঢাকা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ এইচ এম রেজওয়ানুল কবীর বলেন, জোড়া লাগা শিশু দু’টির ব্যাপারে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান বলেন, শিশু দু’টির চিকিৎসার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে রয়েছে।  

শিশু দু’টির চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে সমাজের বিত্তবান মানুষ এগিয়ে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।