ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শাহবাগে কার্টুন ও ছবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
শাহবাগে কার্টুন ও ছবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদ শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী কার্টুন ও ছবি প্রদর্শনী | ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে কার্টুন ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে। প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।

রোববার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে ধর্ষককে সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানান উপস্থিত নেতাকর্মীরা।

শামীমা নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, আমি আজ এখানে এসেছি, জানি না বাসায় ফেরার পথে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে কি না। হায়েনার দল এখন সর্বত্র বিরাজমান। আমরা একটি বা দুটি ঘটনা নয়, সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।

আসাদুল হক নামে আরেক আন্দোলনকারী বলেন, এমন একটা দেশের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। বার বার শাসক গোষ্ঠীর হাতে ধর্ষণ হতে হয় আমাদের মা-বোনদের। আমরা আজও স্বপ্ন দেখি এমন একটি রাষ্ট্রের যেখানে নারী-পুরুষ সমানভাবে ঘুরবে, কেউ কাউকে নির্যাতন করবে না। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক রাজিব বলেন, আমাদের মা-বোনেরা কেউ কোথাও নিরাপদে নেই। সর্বত্রই ধর্ষণ নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধ করতে উৎসাহ দেয়। যতদিন ধর্ষকদের বিচার না হবে ততদিন আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আগামী ১৬ অক্টোবর ঢাকা থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের উদ্দেশে লংমার্চ করব আমরা।

গত শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ এর পক্ষে ৯ দফা দাবি জানানো হয়েছিল। দাবিগুলো হলো:
# সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতায় যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা ও ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অপসারণ করা।
# পাহাড়ে-সমতলে নারীদের ওপর সকল প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করা।
# হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর করা ও নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ করা।
# ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিসিএল’র কার্যকরী ভূমিকা নেওয়া।
# তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ এবং তার আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
# অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করা ও ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করা।
# ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭৯-১৫৫ (৪) ধারাকে বিলোপ করা এবং ডিএনএ আইনে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করা।
# পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈসম্যমূলক যে কোনো প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করা।
# গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২০
ইএআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।