ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চা আস্বাদন অধিবেশন: প্রায় সব বাগানের চা উত্তম মানের

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২০
চা আস্বাদন অধিবেশন: প্রায় সব বাগানের চা উত্তম মানের টি-টেস্টিংয়ের জন্য স্থাপিত বিভিন্ন গ্রেডের চা। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: সর্বাধিক জনপ্রিয় পানীয় চা। দিন দিন বেড়েই চলেছে এর চাহিদা।

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চিকিৎসক এখন রোগীর ব্যবস্থাপত্রে বিশেষ ধরনের চা পথ্য হিসেবে নিয়মিত পান করার কথা লিখে থাকেন। বাংলাদেশের চা বাগানগুলোর উৎপাদিত চা এর গুণগতমান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রতি বছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হয়েছে টি-টেস্টিং বা চা আস্বাদন। অর্থাৎ এর চা পাতা এবং চায়ের বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এর ফলাফল প্রকাশ। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটর (বিটিআরআই) টি-টেস্টিং রুমে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘চা আস্বাদন’ অধিবেশন। এখানে বৃহত্তর সিলেট বিভাগের ৫টি ভ্যালি অর্থাৎ জুড়ি, লংলা, বালিশিরা, মনু-দলই এবং লস্করপুরের প্রায় অর্ধশত চা বাগানের বিভিন্ন গ্রেডের চা মান যাচাইয়ের জন্য এখানে উপস্থাপিত হয়েছে।  

সেসব চা বাগানের ডিএম, বিওপি, জিবিওপি, এফওএফ, ওএফ, পিএফ, সিডি, আরডি, ডাস্ট গ্রেডগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায় অধিকাংশই চা বাগানেই তাদের উন্নতমানের চা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।  

৮ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম। বিটিআরআইর পরিচালক ড. মোহম্মদ আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিবির প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হক।  

সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জুড়ি ভ্যালির অধিবেশনে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন চা বাগানের বিভিন্ন গ্রেডের চা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে মান যাচাই করে প্রাপ্ত তথ্য কাগজে লিপিবন্ধ করা হয়েছে। কালো চা দানার মধ্যে ভেসে উঠা চায়ের কোনো সমস্যা দেখা গেলে তা উপস্থিত বাগান কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণসহ এ সমস্যার সমাধানও তাৎক্ষণিক বলে দেওয়া হচ্ছে।  

এখানে প্রতিটি চা-বাগানের চা-পাতা হাতে নিয়ে এবং এর রস টেস্ট করে চা আস্বাদন অধিবেশন পরিচালনা করেন বিটিআরআইর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. মো. ইসমাইল হোসেন।   এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করেন বিটিআরআইর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসও) মো. রিয়াদ আরেফিন এবং ঊর্ধ্বতন খামার সহকারী মো. মুজিবুর রহমান।

বিভিন্ন চা-বাগানের সিনিয়র টি-প্লান্টার (চা ব্যবস্থাপক), ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লে. কর্নেল মোহাম্মদ কালাম আজাদের নেতৃত্বে ১০ জন সেনা অফিসার এবং কমান্ডার জিএম সরোয়ার সুমনের নেতৃত্বে চারজন নৌ অফিসারদের দুইটি চৌকস টিম।  বিটিআরআইর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. মো. ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দুই-একটি চা-বাগান ছাড়া চা নমুনা উপস্থাপনাকারী প্রায় সকল বাগানের চায়ের মান ছিল ‘থ্রি-প্লাস’ এবং ‘থ্রি ডাবল প্লাস’ অর্থাৎ উত্তমমানের চা। যা খুবই আশাব্যঞ্জক। Dry Leaf Appearance (তৈরিকৃত চায়ের অবয়ব), Infused Leaf Appearance (ছাকনিপাতার উজ্জ্বলতা) এবং Liquor Characteristics (লিকারের বৈশিষ্ট্য বিবেচনা) এগুলোর ওপর ভিত্তি করে চা-পাতাগুলোকে এখানে সুক্ষ্মভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।  

বাংলাদেশের চা আন্তর্জাতিকবাজারে নতুন করে পৌঁছে দেওয়ার প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশের চা আন্তর্জাতিক মানের ছিল এবং এখনো আছে। বিশ্ববাজারে যদি আমাদের চায়ের চাহিদাকে বাড়াতে চাই তবে ২টি জিনিসের ওপর আমাদের বেশি করে লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি হচ্ছে-Costs of Product (চায়ের মূল্য) এবং Quality (চায়ের মান)। সেদিকগুলো নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছি। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে আগামীতে আমরা ভালোমানের চা-রপ্তানি করতে পারবো বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২০
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।