ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যৌতুক না পেয়ে নির্যাতন করে গৃহবধূর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২০
যৌতুক না পেয়ে নির্যাতন করে গৃহবধূর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ নির্যাতিতা গৃহবধূ চাঁদনী। ছবি: বাংলানিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: যৌতুকের টাকা না পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও শশুরবাড়ির পরিবারের বিরুদ্ধে। এমনকি যৌতুকের টাকা দেওয়ার পরও বুধবার বিকেলে (১৪ অক্টোবর) চুল কেটে নেয় অভিযুক্ত পরিবারটি।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে সদর মডেল থানায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামি করে মামলা করেছেন নির্যাতিতা গৃহবধূ চাঁদনী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের পিয়নপাড়া গ্রামে পরিবারের সম্মতিতে পাঁচ বছর আগে এমরাজ শেখের মেয়ে চাঁদনী খাতুনের (২৪) সঙ্গে বিয়ে হয় একই গ্রামের ইসরাফিল শেখের ছেলে রবিউল ইসলামের (৩৫)। বিয়ের এক বছর পর দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে রবিউল এবং তার বাবা ইসরাফিল শেখ ও মা জাইলী বেগম। এরপর মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করে ৫০ হাজার টাকা দেন চাঁদনীর বাবা-মা। এরপর দাবির বাকি এক লাখ ৫০ হাজার টাকার জন্য বিভিন্ন সময়ে চাঁদনীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে রবিউল।

নির্যাতনের শিকার চাঁদনী বাংলানিউজকে বলেন, যৌতুকের দাবিতে রাতে বাসায় ফিরে মারধর করতেন মাদকাসক্ত রবিউল। নির্যাতনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাবার বাড়িতে অবস্থান করি। গত বুধবার শ্বশুর বাড়িতে গেলে টাকার জন্য নানা কথা শোনায় শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী। আমার দিনমজুর বাবার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানালে বিকেলে শ্বশুর-শাশুড়ির যোগসাজশে মারধর করেন। একপর্যায়ে অপমান ও লাঞ্ছিত করতে চাঁদনীর চুল কেটে দেন স্বামী রবিউল।  

চাঁদনী আরও জানায়, নির্যাতনের পর বাবার বাড়িতে চলে এসেছি। অমানবিক নির্যাতন ও মারধরের বিচার চাই।

চাঁদনীর বাবা এমরাজ বাংলানিউজকে বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করতো। কয়েকবার মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছি। কিন্তু বারবার অনুরোধ করে নির্যাতন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাঁদনীকে নিয়ে যায়। মেয়ের সুখের কথা ভেবে ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন আরো এক লাখ ৫০ হাজার টাকা চাইছে। এতগুলো টাকা কোথায় পাবো?

চাঁদনীর মা ডুমিয়ারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, রবিউল রাজমিস্ত্রীর কাজ করে যা আয় করে, তার সবটাই গাঁজা-মদ খেয়ে শেষ করে দেয়। সংসার ও কিস্তি চালাতে গিয়ে বাড়িতে ফিরে মেয়ে চাঁদনীকে টাকার জন্য মারধর করতো।

এদিকে অভিযুক্ত রবিউল ও তার পরিবার পলাতক থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলা নেওয়া হয়েছে। পরে রবিউলের মা জইলী বেগমকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি বাকি আসামিদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২০
কেএআর/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।