ঢাকা, সোমবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মাগুরায় বাড়ছে কিশোর অপরাধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
মাগুরায় বাড়ছে কিশোর অপরাধ

মাগুরা: মাগুরায় বাড়ছে কিশোর অপরাধ। খুনের মত বড় ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা।

 

চলতি মাসেই ২টি খুনের ঘটনায় আটক হয়েছে ৫ কিশোর। যাদেরকে যশোর শিশু কিশোর সংশোধনীগারে পাঠানো হয়েছে।

সবশেষ কিশোর অপরাধের ঘটনা ঘটেছে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা দারিয়াপুর গ্রামে। আর্থিক লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে ৩ কিশোরের হাতে খুন হয়েছে মনিরুল ইসলাম (৪৮) নামের এক ব্যাক্তি।

আটকরা হলো চৌগাছি গ্রামের প্রণব প্রামানিক (১৮), বাবু মীর (১৫) ও রাহুল মীর (১৮)। এই তিন কিশোর মনিরুল ইসলামকে জবাই করে হত্যা করে।

অন্যদিকে গত অক্টোবরে মাগুরা সদর উপজেলায় বারাশিয়া গ্রামে রোহান নামে এক কিশোরের হাতে খুন হয়েছে মাহিদ (৭) নামের এক শিশু।

এদিকে গত বছর একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হয়েছে ২ ইজিবাইক চালক। শুধু খুন নয়, কিশোরদের ব্যবহার করা হয়েছে মাদক পাচারের মত গুরুতর অপরাধে। জেলার ৪টি উপজেলায় বিগত কয়েক বছরে মাদক পাচারের অভিযোগে যেসব চক্র ধরা পড়েছে তাদের ৬০ ভাগই কিশোর।

এছাড়া যৌন হয়রানি, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে কিশোরদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলছে।

মাগুরা বিচারক জেলা ও দায়রা জজ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, নারী নির্যাতন মামলার সংখ্যা ১২০৪টি। শিশু নির্যাতন মামলার সংখ্যা ২২১টি।

কিশোর অপরাধ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সুফিয়ান বাংলানিউজকে বলেন, কিশোর অপরাধের একটা বড় অংশই পরিবারের স্নেহ ছাড়া, ভালাবাসাহীনভাবে বেড়ে ওঠে।  

ইতোপূর্বে এ রকম অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রায় কিশোরই ছোট থাকতে পরিবারের অসুস্থ পরিবেশে বড় হয়ে অপরাধে জড়িয়েছে। না হয় পরিবার ছাড়া রাস্তা থেকে বড়দের সংস্পর্শে মিশে অপরাধে জড়িয়েছে। কিশোরদের নানা সময়ে অপরাধের কারণে আটকের পর জেল জরিমানা হয়। কিন্তু ছাড়া পেয়ে আবারও তাদের অপরাধে জড়াতে দেখা যায়।  

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি সবাই মিলে এদের পাশে দাঁড়াই এবং স্নেহ-মমতা দিয়ে বড় হতে সহযোগিতা করি তবে সমাজে কিশোর অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।

মাগুরা সদর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ঝুমুর সরকার বাংলানিউজকে বলেন, বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন, যৌতুক বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িশিয়াল আদালতের রিপোর্ট দিয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, প্রতি মাসে, বাল্যবিবাহ থেকে শুরু করে নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ২০-২৫টি অভিয়োগ এসে থাকে।

তিনি এই অভিযোগে বিষয়ে বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, অল্প  বয়সে বিবাহ হওয়া স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া বা চাওয়া-পাওয়ার মাঝে অমিল থাকে। যে কারণে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ বিভিন্ন ঘটনার ঘটে থাকে।

মাগুরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, সাম্প্রতি সময়ে দেখা যাচ্ছে মাগুরায় কিশোররা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এর কারণ হিসেবে দেখা যায়, পারিবারিকভাবে যে বিধি নিষেধ, তা না থাকায় তারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। সচেতন অভিভাবকদের বলেন, তারা যেন তাদের শিশু কিশোরদের প্রতি নজর রাখেন। তাদের সন্তানরা কোনো অসৎ সঙ্গে মিশছে কিনা সেদিকে দৃষ্টি রাখা হয়।  

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিট পুলিশের মাধ্যেমে কিশোর অপরাধ বিষয়ে সচতন করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।