সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কলারোয়া ও যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাজারে সংযোগ সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুটি উপজেলার অন্তত ৩০ গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। ফলে বাঁশের সাঁকোতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, সাতক্ষীরা ও যশোরের দুটি উপজেলার অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষের কপোতাক্ষ নদ পারাপারে একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। সংস্কারের পর সংস্কার, কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই নড়বড়ে হয়ে পড়ে সাঁকোটি। জরুরি চিকিৎসা, জীবিকার সন্ধানে কর্মস্থলে যাওয়া, মৌলিক চাহিদা পূরণসহ এই পথ পাড়ি দিয়ে ত্রিমোহনীর পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনীর এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা, মাঠপাড়া, ছলিমপুর, পাকুড়িয়া, দলুইপুর, গড়ান বাজার, বড় খলসী, ছোট খলসী, বামনখালী, ক্ষেত্রপাড়া ও ওফাপুর এবং যশোরের কেশবপুর উপজেলার চাদড়া, বেলতলা, হাজরাকাটি, খাজুরা, হাকিমপুর, পাজাখোল, রাজগঞ্জ, নিংড়–, জাহানপুর, নিমতলা, ভোগতিসহ অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ।
মাত্র একটি সেতুর অভাবে আধা কিলোমিটার যেতে মানুষকে পারি দিতে হয় প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ।
কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের শেখ সোহরাব বলেন, কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাজারে সংযোগ সেতু না থাকায় আমরা যারা সাতক্ষীরা জেলার অধিবাসী, তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। কারণ এখান থেকে কলারোয়া বাজারে যাওয়ার চেয়ে কেশবপুর কাছে। তাছাড়া উৎপাদিত ফসল কেশবপুর মোকামে বিক্রি করতে হয়। বাঁশের সাঁকো দিয়ে তো লোড ভ্যান পার করা যায় না। মালামাল, ফসলাদি ঘাড়ে করে পার করতে হয়।
ক্ষেত্রপাড়ার আজিজুর রহমান বলেন, কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হয় না। ভ্যানে করে সাঁকো পর্যন্ত আনতে হয়, তারপর সাঁকো পার করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক সময় অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়।
তিনি সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাজারে সংযোগ সেতু স্থাপনের মধ্যদিয়ে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের উদ্যোগ নিন।
বামনখালী গ্রামের ওবায়দুর রহমান বলেন, পারাপারের জন্য যে সাঁকোটি আছে, তা অত্যন্ত নাজুক। যতটুকু লোড নেওয়ার ক্ষমতা সাঁকোটির, তার চাইতে বেশি লোড দেওয়ায় বাঁশ-খুঁটি নড়বড়ে হয়ে যায়। পাটাতন খুলে পড়ে। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। নিষেধ করা সত্বেও অনেকেই মোটরসাইকেলসহ ভারী জিনিসপত্র পারাপার করে। আর এ কারণেই সাাঁকোটি আরো নাজুক হয়ে পড়ে। তবে এই সাঁকো দিয়ে যেতে না পরলে ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয় সে কারণে ঝুঁকি হলেও এই পথ দিয়েই সবাই যাতায়াত করে।
কলারোয়া উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে ইতোমধ্যেই কাশিয়াডাঙ্গা-ত্রিমোহনী বাজারে সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২০
আরএ