মুন্সিগঞ্জ: মূল পদ্মাসেতুর কাজের চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩.৩৯ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজে ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৬৮০.৬০ কোটি টাকা।
মূল সেতুর কাজ শেষ করার জন্য সংশোধিত তারিখ নির্ধারিত আছে ২০২১ সালের ৩০ জুন। বর্তমানে মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯০.৫০ শতাংশ। আর পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। মূল সেতুর কাজ শেষ করতে সময় রয়েছে মাত্র ৮ মাস।
এদিকে পুরো পদ্মাসেতু প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ধরা হয়েছিল ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) পর্যন্ত সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ২৩ হাজার ৭৯৬ দশমিক ২৪ কোটি টাকা (৭৮ দশমিক ৮১ শতাংশ)। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে বাকি আছে ৬ হাজার ৩৯৭.১৫ কোটি টাকা। পদ্মাসেতুতে কাজ চলমান আছে ৫ বছর ১০ মাসের বেশি সময় ধরে।
শনিবার বিকেলে পদ্মাসেতুর প্রকৌশল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। মূল সেতুর এ পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি বিষয়ক তথ্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মূল সেতুর একজন প্রকৌশলী বাংলানিউজকে জানান, পদ্মাসেতুতে নদী শাসন কাজের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ ও আর্থিক কাজের অগ্রগতি ৬৩.৩ শতাংশ। নদীশাসন কাজের চুক্তিমূল্য হলো ৮ হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৪৮৮ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা। বাকি আছে আর ৩২১৯.০৫ কোটি টাকা। সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৪৯৯ দশমিক ৫১ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণ, পুর্নবাসন ও পরিবেশের কাজের বরাদ্দ ৪ হাজার ৩৪২ দশমিক ২৬ কোটি টাকা।
এদিকে, মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি এখন ৯০.৫০ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৮.০৩ শতাংশ। মূল সেতু কাজের চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৬৮০ দশমিক ৬০ টাকা। দেশি-বিদেশি পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট, আয়কর, যানবাহন, বেতন, ভাতা অন্যসহ বরাদ্দ ৩ হাজার ৫১০ দশমিক ৪২ কোটি টাকা। সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া কাজের অগ্রগতি শতভাগ সম্পন্ন।
তিনি আরও জানান, পুরো পদ্মাসেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ধরা হয়েছিল ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। শনিবার পর্যন্ত সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ২৩ হাজার ৭৯৬ দশমিক ২৪ কোটি টাকা (৭৮ দশমিক ৮১ শতাংশ)। কাজ সম্পন্ন করতে বাকি আছে ৬ হাজার ৩৯৭.১৫ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। সেই হিসেবে পদ্মা সেতুতে কাজ চলমান ৫ বছর ১০ মাসের বেশি সময় ধরে। মূল সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ১৬৬টি বসানো হয়েছে। দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ৬৪৬টি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার টি গার্ডারের মধ্যে ২৫৮টি স্থাপন করা হয়েছে। স্প্যান বসানোর পাশাপাশি স্ল্যাব বসানোর কাজও এগিয়ে চলছে। বন্যা ও করোনা পরিস্থিতিতে চারমাস স্প্যান বসানো না গেলেও চলতি মাসে চারটি স্প্যান বসানো হয়েছে।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, পদ্মাসেতুতে মোট ৪২টি পিলারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। ইতোমধ্যে ৩৫টি স্প্যান বসিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ৫ হাজার ২৫০ মিটার। আর ছয়টি স্প্যান বসিয়ে দৃশ্যমান বাকি ৯০০ মিটার। আর বসে যাওয়া রেলওয়ে স্ল্যাব ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ চলমান আছে।
মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২০
এনটি