ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঝিনাইদহে বেড়েই চলেছে কিশোর অপরাধ 

এম রবিউল ইসলাম রবি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২০
ঝিনাইদহে বেড়েই চলেছে কিশোর অপরাধ 

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে দিন দিন বেড়েই চলেছে কিশোর অপরাধ। এর মধ্যে সংঘটিত হয়েছে খুন, চুরি, ছিনতাইসহ বেশ কিছু ঘটনা।


 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা বেশিরভাগই কিশোর বয়সের। কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকায় ঝিনাইদহ শহর ও জেলার বিভিন্ন বাজার, গ্রামাঞ্চলের চায়ের দোকানগুলোতে কিশোরদের ধূমপানের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে সুশীল সমাজের ধারণা, স্কুলগামী কিশোরদের হাতে দামি মোবাইল ও প্রযুক্তির অপব্যবহারে তারা জড়িয়ে পড়ছে খুন ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধে। তাছাড়া অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে বিপথগামী কিশোররা নেশার টাকা জোগাড় করতে চুরিসহ জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে।  

জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর গ্রামে চলতি বছরের মার্চ মাসে নাঈম নামে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করে তার এলাকার  বন্ধু জহুরুল (১৬)। নিহত নাঈম (১৫) স্থানীয় কোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  ছাত্র। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছিনতাইয়ের টাকা ভাগাভাগি করতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এছাড়া ছিনতাই আতঙ্ক বিরাজ করছে ঝিনাইদহ শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। সন্ধ্যার পরপরই এক শ্রেণির উঠতি বয়সী কিশোররা বিভিন্ন সড়কে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে পথচারীদের মোবাইলসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে অবাধে পালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। এ ধরনের একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনায় যেকোনো সময় প্রাণহানী ঘটতে পারে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের আশঙ্কা।
 
অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৩-১৬ বছরের মধ্যে।

ঝিনাইদহ জেলা মানবাধিকার সভাপতি অমিনুর রহমান টুকু বাংলানিউজকে বলেন, দেশের বাহিরে কিশোর অপরাধের সংখ্যা অনেক বেশি। পাশাপাশি বেশিরভাগ নারী ডিভোর্স হওয়ার কারণে পরিবার থেকে ওই কিশোররা আলাদা হয়ে পড়াই কিশোর অপরাধ দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে মিডিয়ায় প্রচারিত বড় শহরগুলোর কিশোর গ্যাং এর সংবাদও উৎসাহিত করছে কিশোরদের। এখনি পদক্ষেপ না নিলে সাংস্কৃতিকভাবে ঝিনাইদহের ভবিষ্যতে সামাজিক নৈরাজ্যসহ ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।  

ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মুনতাসীরুল ইসলাম বলেন, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার অভাব, তাদের হাত দামি মোবাইল আর এসব মোবাইলে প্রযুক্তির অপব্যবহার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহজলভ্যতা কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গ্রামঞ্চলে অভিভাবকদের অসচেতনতায় কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধে, আসক্ত হচ্ছে নেশায়। তারা নেশার টাকা জোগাড় করতে পা বাড়াচ্ছে অপরাধ জগতে।
 
তিনি আরো বলেন, আমরা বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছি। যথাযথ আইন প্রয়োগ করে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।

এদিকে আদালত সূত্রে জানা যায়, এ বছর সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পাঁচটি মামলায় আটজন কিশোর অপরাধীকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।