ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শিবগঞ্জে বয়স শেষেও চাকরিতে বহাল গ্রাম পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২০
শিবগঞ্জে বয়স শেষেও চাকরিতে বহাল গ্রাম পুলিশ অভিযুক্ত আনোয়ারুল হক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ আনোয়ারুল হকের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরির বয়সসীমা শেষ হলেও চাকরিতে বহাল থাকার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আনোয়ারুল চার জায়গায় চার ধরনের জন্ম তারিখ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনটি জন্ম সনদের তারিখ অনুযায়ী চাকরির বয়স শেষ হলেও একটি সনদ অনুযায়ী এখনও চাকরির বয়স রয়েছে।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয়ের পরিদর্শকের তথ্য অনুযায়ী চৈতন্যপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নবম শ্রেণি পাস করেছেন এ গ্রাম পুলিশ। এখানে তার জন্ম তারিখ ০১-০৭-১৯৬০, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২২৫১৪, শিক্ষাবর্ষ ১৯৭৩-১৯৭৪। বিদ্যালয়ের রেজিস্টারে তার বাবার নাম মন্টু মণ্ডল এবং গ্রাম দেখানো হয়েছে বামুনগাঁও।

অন্যদিকে, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারির চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসারের স্বাক্ষরিত এনআই ডাটাবেজ থেকে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ০১-০১-১৯৫৮। এখানে তার বাবার নাম শাহজাহান আলী, মায়ের নাম মোসা. বানু বেগম, শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১৯৫৮৭০১৮৮২৩০৩৪৮৬।

আর ১৪ নম্বর ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) গ্রাম পুলিশদের চাকরি সংক্রান্ত তথ্য দিতে আনোয়ারুলের জন্ম তারিখ দেওয়া হয়েছে ১৫-০৬-১৯৫৮ এবং সেখানে বাবার নাম শাহাজাহান (মন্টু) ও শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেণি।

এছাড়া বিদ্যালয়ে ভর্তি রেজিস্ট্রার অনুযায়ী চতুর্থ জন্ম তারিখ হলো ১৫-০৬-১৯৬৮।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে আনোয়ারুলের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শতাধিক স্থানীয় জনগণের স্বাক্ষর করা আবেদন লিখিত অভিযোগ আকারে জমা দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন আবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান হাবিব, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আতাউর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন।  

তদন্ত সাপেক্ষে বয়স চুরির ঘটনা প্রমাণ হলেও ধাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান তাবারিয়ার চৌধুরীর ক্ষমতার দাপটে আনোয়ারুল চাকরিতে বহাল থেকে একের পর এক অনিয়ম করে চলছেন বলে জানান অভিযোগকারীরা। এছাড়া একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ আনোয়ারুল তার প্রভাব খাটিয়ে গ্রামের মানুষকে বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়ার নামে উৎকোচ নিয়ে থাকেন। যারা ভাতাভোগীরা উৎকোচ না দিলে তাদের তিনি হয়রানিও করেন।

এ ব্যাপারে গ্রাম পুলিশ আনারুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, চৈতন্যপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিস্ট্রার অনুযায়ী আমার জন্ম তারিখ ১৫-৬-১৯৬৮ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ভুল আছে। সংশোধনের জন্য আবেদন করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বী বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রাম পুলিশ আনোয়ারুলের ঘটনাটি তদন্ত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। দুই বার শোকজ করা হয়েছে। এক বার জবাব দিলেও পরের বার জবাব দেননি। নিয়ম অনুযায়ী তিন বার শোকজ করতে হবে। কয়েক দিনের মধ্যে আরও একটি শোকজের পর আইন অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২০
কেএআর/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।