ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নলডাঙ্গায় বিসিআইসির নির্ধারিত স্থানেই বাফা সার গোডাউন নির্মাণের দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২০
নলডাঙ্গায় বিসিআইসির নির্ধারিত স্থানেই বাফা সার গোডাউন নির্মাণের দাবি নলডাঙ্গায় বিসিআইসির নির্ধারিত স্থানেই বাফা সার গোডাউন নির্মাণের দাবি

নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় বিসিআইসি কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত স্থানেই বাফার সার গোডাউন স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মিছিল করেছে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।  

রোববার (০১ নভেম্বর) দুপুরের দিকে নলডাঙ্গা পেট্রোলপাম্প সংলগ্ন সিএনজি মোড়ে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এতে স্থানীয় উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রায় হাজারখানেক মানুষ অংশ নেয়। এসময় ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন নাটোর নলডাঙ্গা সড়কে।   

এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস শুকুর, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মুকুল,  জেলা পরিষদ সদস্য  ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রইস উদ্দিন রুবেল, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান  আব্দুল হালিম সরদার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর  শরিফুল ইসলাম পিয়াশ, পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, খাজুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, স্থানীয় জমির মালিক মো. সাজ্জাদ হোসেন, স্থানীয় কৃষক সুমন হোসেন, মিন্টুসহ আরো অনেকে।          

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ২ বছর আগে নলডাঙ্গা পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন ৫ দশমিক ৯৬ একর জমিতে ২০ হাজার মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বাফা সার গোডাউন স্থাপনের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়। সেখানে বিসিআইসির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে  জমির স্কেচ ম্যাপ তৈরি করে লাল নিশানা দেন জেলা প্রশাসন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম শিমুল বাফার গোডাউন নির্মাণের জন্য ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।  

একই সময়ে জমি অধিগ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি মালিকদের চার ধারার নোটিশ দেওয়া হয়। এরপর থেকে গত ২ বছর ধরে সেখানে কোনো রকম ফসল আবাদ করতে পারেননি জমি মালিকরা। এমনকি এই দুই বছরে জমিও কেনাবেচা করতে পারেননি তারা। এ অবস্থায় জমির মালিকরা প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এ অবস্থায় হঠাৎ করেই গোডাউন স্থানান্তরের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন একশ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মহল, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বক্তারা বলেন, এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেছেন জমির মালিকসহ এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ।  

তাই তারা বিসিআইসি কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত স্থানেই বাফা গোডাউন স্থাপনের দাবি জানান। অন্যথায়, বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তারা। একইসঙ্গে নলডাঙ্গা উপজেলায় বাফার গোডাউন নির্মাণে তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও শিল্পমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পরে তারা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে শিল্পমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।  

এদিকে নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর ও সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, 
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালে একনেক সভায় নলডাঙ্গা উপজেলায় বাফার গোডাউন নির্মানের জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রমও শুরু হয়েছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।  অথচ এই বাফার গোডাউন নির্মানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নানা টালবাহানা করা হচ্ছে।

তারা দাবি করেন, একটি বাফার গোডাউন নির্মাণের জন্য তিনটি শর্ত নৌপথ, রেলপথ ও স্থলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা বলা হয়, তা এখানে বিদ্যমান আছে। এছাড়া নলডাঙ্গা উপজেলাটিতে উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার’খ্যাত হালতিবিল রয়েছে। এখানকার সঙ্গে জেলার সাতটি উপজেলা এবং বিভিন্ন জেলার সঙ্গেও যোগাযোগের ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ একটি মহল নলডাঙ্গা উপজেলা থেকে অন্যত্র এই বাফার গোডাউন সরানোর পাঁয়তারা করছে। যা নলডাঙ্গা উপজেলার মানুষ মেনে নেবে না। বিসিআইসি কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত স্থান নলডাঙ্গা মৌজাতেই এই বাফার গোডাউন নির্মাণ করতে হবে। অন্যথায়, কঠোর আন্দোলনে নামবে নলডাঙ্গা বাসি।

জমির মালিক সাজ্জাদ হোসেন দাবি করে বলেন, ৪ ধারা নোটিশ পাওয়ার পর থেকে তারা জমিতে কোনো ফসল চাষাবাদ করতে পারেননি। এমনকি কোনো স্থাপনা নির্মাণ ও জমি কেনাবেচা করতে পারেননি। উপরন্তু এসব জমি থেকে গাছপালা কেটে নেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জমির মালিকরা গত দুই বছরে অন্তত দুই কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তাই তারা এ স্থানেই বাফার গোডাউন স্থাপনের দাবি জানান। তা না করা হলে জমির মালিকরাও আন্দোলনে নামবেন বলে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২০
ওএফবি/এমএমআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।