ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রায়হান হত্যা: রিমান্ডে থাকা এএসআই আশেকে এলাহী হাসপাতালে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২০
রায়হান হত্যা: রিমান্ডে থাকা এএসআই আশেকে এলাহী হাসপাতালে

সিলেট: সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিনের (৩০) মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচদিনের রিমান্ডে থাকা আশেকে এলাহীকে অসুস্থ দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 
রায়হান হত্যা মামলার ঘটনায় বরখাস্ত চার ও প্রত্যাহার হওয়া তিন পুলিশ সদস্যের একজন ছিলেন আশেকে এলাহী।

তিনিই রায়হানকে ধরে ফাঁড়িতে এনেছিলেন।
 
গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ লাইন্স থেকে তাকে গ্রেফতার দেখায় মামলার তদন্তে থাকা পিবিআই। পরদিন ২৯ অক্টোবর তাকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে মঞ্জুর হয় পাঁচদিনের রিমান্ড। কিন্তু রিমান্ডে নেওয়ার একদিন পর ৩১ অক্টোবর জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
 
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মুহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পাঁচদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদকালে এএসআই আশেকে এলাহী অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার বুকে ব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে। তবে বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থ রয়েছেন। তাকে আবারো রিমান্ডে আনা হতে পারে।
 
গত ১১ অক্টোবর সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে  তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান  রায়হান।
 
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় সিলেট কোতোয়ালি থানাধীন বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান। নিহত রায়হান নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়ান মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
 
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ঘটনা অন্য দিকে মোড় নিতে থাকে। মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন।
 
মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত কার্যক্রম চালায়। নিহতের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়নাতদন্ত করা হয়। রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন মেলে ফরেনসিক রিপোর্টে।
 
এরইমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর পলাতক থাকলেও পুলিশ হেফাজতে থাকা কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে ২০ অক্টোবর ও হারুনুর রশিদকে ২৪ অক্টোবর গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ২২অক্টোবর এসএমপি কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা।  
 
রায়হান নিহত হওয়ার ঘটনায় 'বৃহত্তর আখালিয়া (বারো হামছায়া) সংগ্রাম পরিষদ'র ব্যানারে এলাকাবাসী বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে তৎপর রয়েছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২০
এনইউ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।