ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শ্বাসনালী ফুটো করে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই মারা যায় শিশুটি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২০
শ্বাসনালী ফুটো করে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই মারা যায় শিশুটি  আরিফুল ইসলাম

নাটোর: নাটোর সদর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।  

সোমবার (০২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার সময় এ ঘটনা ঘটে।

 মো. আরিফুল ইসলাম (১০) সদর উপজেলার চর তেবাড়িয়া গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে। সে গুরুদাসপুরের খোলাকান্তনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্র বলে জানা গেছে।

শিশুটির বাবা খোদাবক্সের অভিযোগ, সকালে তার ছেলে আরিফুল খেলা করছিল। এ সময় হঠাৎ তার গলায় একটি বাঁশি আটকে গেলে তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. কাজী মোহম্মদ আলী রাসেল জরুরি বিভাগেই শিশুটির গলা কাটলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।  

এ সময় অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।  

তবে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. কাজী মোহম্মদ আলী রাসেল মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, শিশুটির শ্বাসনালীতে কৃত্তিম নল স্থাপনের সময় অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী  মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। শিশুটিকে কোনো ভুল চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।  

এদিকে এ ঘটনার পরপর উত্তেজনা শুরু হলে আত্মগোপন করেন ওই চিকিৎসক। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বিলাপ করছেন বাবা খোদাবক্স ও মা আছমা বেগম।  

শিশুটির বাবা খোদাবক্সের অভিযোগ ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে তার একমাত্র সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছে নিহতের পরিবার।

নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মুনজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটির শ্বাসনালীতে বাঁশিটি আটকে যাওয়ায় খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। এ অবস্থায় তার স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. কাজী মোহাম্মদ আলী তার প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে পরিবারের লোকজনের অনুরোধে জরুরি বিভাগেই শ্বাসকষ্ট কমাতে শ্বাসনালীটি ফুটো করে দেন। কিছুক্ষণ পরই শিশুটি মারা যায়।  

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে দায়িত্বরত চিকিৎসকের এ ধরনের ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হয়নি। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।   

নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আনছারুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে  বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ, সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমানসহ স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।  

নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।