ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রায়হান হত্যা: তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৮ সদস্য করোনা আক্রান্ত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২০
রায়হান হত্যা: তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৮ সদস্য করোনা আক্রান্ত

সিলেট: সিলেটে আলোচিত রায়হান উদ্দিন (৩০) হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আট সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
 
আক্রান্তদের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা মুহিদুল ইসলামসহ পাঁচজন পুলিশ পরিদর্শক ও তিন জন কনস্টেবল রয়েছেন।


 
পিবিআইর সিলেটর পুলিশ সুপার খালিদ উজ জামান বাংলানিউজকে বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচ জন ইন্সপেক্টর ও তিনজন কনস্টেবল রয়েছেন।
 
তিনি বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা আক্রান্ত হলেও রায়হান হত্যা মামলার কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সুযোগ নেই। কেন না, হত্যা মামলার তদন্তে পুরো একটা টিম কাজ করছে।
 
এছাড়া রায়হান হত্যা মামলায় রিমান্ডকালে অসুস্থ হয়ে পড়া এএসআই আশেকে এলাহীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল। হৃদরোগ জটিলতা কেটে উঠলেও মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়া তাকে রোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
 
এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত কয়েকদিন ভিড় ঠেলেও কাজ করতে হয়েছে পিবিআইকে। এ কারণে তারা আক্রান্ত হয়েছেন বলেও ধারণা তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মহিদুল ইসলামের। এছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে সাংবাদিকরাও আতঙ্কে ভুগছেন। কেন না সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেকে তদন্ত কর্মকর্তার সংস্পর্শে ছিলেন।

গত ১১ অক্টোবর সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে  গুরুতর আহত অবস্থায় এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের
ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। পরে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান  রায়হান।
 
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় সিলেট কোতোয়ালি থানাধীন বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান। নিহত রায়হান নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়ান মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরের স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
 
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর ঘটনা অন্য দিকে মোড় নিতে থাকে। মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে।
 
মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত কার্যক্রম চালায়। নিহতের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়নাতদন্ত করা হয়। রায়হানের দেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন মেলে ফরেনসিক রিপোর্টে।
 
এরইমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর পলাতক থাকলেও পুলিশ হেফাজতে থাকা কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গত ২০ অক্টোবর ও হারুনুর রশিদকে ২৪ অক্টোবর গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ২২ অক্টোবর এসএমপি কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা।  
 
রায়হান নিহত হওয়ার ঘটনায় 'বৃহত্তর আখালিয়া (বারো হামছায়া) সংগ্রাম পরিষদ'র ব্যানারে এলাকাবাসী বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে তৎপর রয়েছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২০
এনইউ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।