রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে রাতে কিছু এলাকায় রহস্যজনকভাবে হঠাৎ করেই সড়কবাতি পুড়ে যেত। গত এক বছরে কোটি টাকার সড়কবাতি পুড়ে গেছে।
গ্রেফতার ২ জন হলেন- রাসিকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল হাসান ও বৈদ্যুতিক শাখার কর্মচারী মিজানুর রহমান শাহীন।
পিবিআইর তদন্তে উঠে আসে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে সড়কবাতি নিয়মিতভাবে পোড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন দুই প্রকৌশলী। তাদের পরিকল্পনার মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করেন রাসিকের বৈদ্যুতিক শাখার কর্মচারীরা। আর্থিকভাবে লাভবান হতেই তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে সড়কবাতি পোড়ানোর পরিকল্পনা করেন।
রাসিক সূত্র জানায়, গত এক বছরে কোটি টাকার সড়কবাতি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নষ্ট হয়েছে কিছুদিন আগেই বসানো হাই-মাস্ক লাইট। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মামলার পরই এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় বৈদ্যুতিক শাখার কর্মচারী শাহীন। তার দেওয়া তথ্যে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপরই বেরিয়ে আসতে শুরু করে নেপথ্যে থেকে কারা এতদিন পুড়িয়েছেন নগর সড়কের বাতি। ইতিমধ্যে শফিকুল হাসান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট বৈদ্যুতিক শাখার কর্মচারী মিজানুর রহমান শাহীন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, সড়কবাতি পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশনা দেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল হাসান। এরপর পিবিআই শফিকুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ১৭ সেপ্টেম্বর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালতে দেওয়া ওই জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, পরিকল্পনাটি করেছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ।
সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, যেসব বাতি পুড়ে যাচ্ছিলো, সেগুলো মনে হয়েছে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে পুড়িয়ে দিচ্ছে। দেখে মনে হয়েছে কেউ গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়েছে। বার বার সড়কবাতি পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে। এ কারণে মামলার সিদ্ধান্ত হয়। ইতোমধ্যে তদন্ত সংস্থা এ নিয়ে কাজ করছে। আমাদের বিদ্যুৎ শাখার দুজনকে গ্রেপ্তারও করেছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশার জানান, দীর্ঘ সময় ধরে সড়কবাতি পুড়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে তারা লাইট বুয়েটে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন। ১৭ সেপ্টেম্বর সেখান থেকে পাঠানো যে ফলাফল তারা পেয়েছেন, তাতে অতিরিক্ত ভোল্টেজের কারণে এতোদিন লাইটগুলো পুড়েছে। ফলে তারা এখন নিশ্চিত, ইচ্ছাকৃতভাবে ভোল্টেজ বাড়িয়ে সেটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম জানান, তাদের কাছে এ ঘটনায় জড়িত কয়েকজনের নাম আছে। ইতোমধ্যে আদালতে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও একজন কর্মচারীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আছে। তারা আরও অনুসন্ধান করছেন। শিগগিরই এ ঘটনার নেপথ্যের সবার নাম উন্মোচন করে আদালতে অভিযোগপত্র দেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২০
এসএস/এইচএডি