ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মা ইলিশ ও জাটকা আহরণ বন্ধে ভারতও ব্যবস্থা নেবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২০
মা ইলিশ ও জাটকা আহরণ বন্ধে ভারতও ব্যবস্থা নেবে ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মা ইলিশ আহরণ ও জাটকা আহরণ বন্ধের সময় আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতও ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে সময়ে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে, সে সময়ে যৌথভাবে মাছ আহরণ বন্ধ রাখার বিষয়ে আমাদের ঐকমত্য হয়েছে।

এছাড়া ডেইরি, পোল্ট্রি ও মৎস্য খাতে উভয় দেশ কীভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের মাছ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি ও চাহিদা অনুযায়ী বিদেশে রপ্তানির ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ভারতের হাই কমিশনার।

বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) রাজধানীর সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তর কক্ষে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ ও অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ উপস্থিত ছিলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বন্ধুপ্রতিম দু’টি দেশ মিলে কীভাবে সমুদ্র সম্পদ আহরণ করা যায় এবং আহরিত সম্পদ কীভাবে দু'দেশের চাহিদা অনুযায়ী আমদানি-রপ্তানি করা যায়, সে লক্ষ্যে ভারত সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। এর মধ্যে মেরিটাইম রিসোর্স সেন্টার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ভারত আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সমুদ্রে মৎস্যসম্পদ প্রাপ্তিস্থান শনাক্তকরণে স্যাটেলাইট ডাটা ব্যবহার, অত্যাধুনিক ফিশিং ট্রলার দেওয়া, জেলেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সুরক্ষা, আবহাওয়া সংক্রান্ত সহযোগিতাসহ অন্যান্য সহযোগিতা দিতে আগ্রহী ভারত। এছাড়াও আমাদের সমুদ্র বা উপকূলীয় এলাকায় মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে যেন অবৈধভাবে কোনো নৌকা বা জাহাজ মাছ ধরতে না পারে সেজন্য ভারতীয় কোস্টগার্ড ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, উভয় দেশে উৎপাদিত মৎস্য ও প্রাণিজাত সামগ্রী কীভাবে আমদানি-রপ্তানি করা যায় সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে দেশের অভ্যন্তরে গবেষণাগার নির্মাণ, রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সীমান্ত এলাকায় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম সংরক্ষণে কোল্ড স্টোরেজ তৈরি, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ জানিয়েছে ভারত। সামগ্রিকভাবে দু’টি বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে যৌথভাবে আমরা কাজ করতে চাই।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বড় ত্যাগ ও অবদানের কথা স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। ভারত মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তাদের সৈন্যরা আমাদের সঙ্গে মিত্র বাহিনীতে যুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশের যে কোনো প্রয়োজনে ভারত পাশে দাঁড়ায়। যে কোনো সময়ের তুলনায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন অনেক ভালো। ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও নিবিড় করে আমরা এক সঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, সামগ্রিকভাবে দুইটি বন্ধুপ্রীতম দেশ হিসেবে যৌথভাবে আমরা কাজ করতে চাই। সেই কাজের ক্ষেত্রটাকে চিহ্নিত করার জন্য দুই দেশে ওয়ার্কিং গ্রুপ আছে। এখন আমাদের ওয়ার্কিং গ্রুপ বসবে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা আছে ও কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে।

ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশে ডেইরি খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী ভারত।

তিনি জানান, বাংলাদেশের মৎস্য রপ্তানির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করার মতো। ভারতে, বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যে বাংলাদেশের মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এজন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প নেওয়ার কথাও এসময় উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২০
জিসিজি/এইচএমএস/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।