ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে কবিরাজ আটক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২০
যশোরে মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে কবিরাজ আটক

যশোর: যশোরের চৌগাছায় মাদরাসা ছাত্রীকে (১০) ঝাড়ফুকের চিকিৎসার নামে কয়েক দফায় ধর্ষণের অভিযোগে এনায়েত আলী (৬০) নামে এক জীনের কবিরাজের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বুধবার (০৩ নভেম্বর) রাতে ভিকটিমের পিতা মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভিকটিম চৌগাছা উপজেলা সদরের একটি মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। অভিযুক্ত এনায়েত আলী চৌগাছা উপজেলার তিলকপুর গ্রামের বাসিন্দা।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব এ তথ্য বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

ভিকটিমের বাবার অভিযোগ, কিছুদিন আগে মেয়েটি হঠাৎ ভয় পেয়ে বাড়ির উঠানে পড়ে গিয়ে বমি করতে থাকে। এসময় জীনের কবিরাজ এনায়েত আলী (৬০) তাদের বাড়িতে গিয়ে বলেন মেয়েটিকে জীনে ধরেছে। ঝাড়ফুঁক করলে ঠিক হয়ে যাবে। তার কথায় বিশ্বাস করে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার মেয়েটিকে ঝাড়-ফুক করানোর জন্য পাশ্ববর্তী গ্রামের মানিকতলা দরগাহে (সেখানে একটি বেল গাছ রয়েছে) আমার স্ত্রীসহ মেয়েকে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে কবিরাজ আমার স্ত্রীকে বলে ঝাড়ফুঁক করানোর সময় অন্য কেউ থাকতে পারবে না। তখন আমার স্ত্রী এনায়েত আলীর সাথে আমার মেয়েকে দিয়ে গ্রামের জনৈক ব্যক্তির বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু এনায়েত আলী আমার মেয়েকে মানিকতলায় না নিয়ে গ্রামের এক ব্যক্তির পেয়ারা বাগানে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। এভাবে একমাসে মেয়েটিকে চিকিৎসার নামে প্রতি শনি, মঙ্গলবারে ঝাড়-ফুকের নামে ৬/৭ দিন একই পেয়ারা বাগানে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে।  গত ১৫ আগস্ট সে বলে আর একবার ঝাড়-ফুক করলেই জীন চলে যাবে। পরে ১৮ আগস্ট আমার মেয়ে তার মা’ অর্থাৎ আমার স্ত্রীর নিকট বিষয়টি খুলে বলে। এরপরও মান সম্মানের কথা চিন্তা করে আমরা স্থানীয় ডাক্তারের মাধ্যমে চৌগাছা শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করাই। চৌগাছা শহরের একটি মাদরাসায় তাকে রেখে আসি। কিন্ত আসামি এনায়েত আলী গত ২৫অক্টোবর বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ওই মাদরাসায় গিয়ে নিজেকে আমার মেয়ের চাচা পরিচয় দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে চায়। তখন ওই মাদরাসার একজন শিক্ষক আমাকে মোবাইলে জানালে নিষেধ করি। পরে আমরা মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

ভিকটিমের স্বজনরা আরও জানান, আড়াই মাস আগে ঘটনাটি ঘটেছে। মান সম্মানের ভয়ে প্রথম দিকে মামলা করতে চাননি। এই ঘটনায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একাধিকবার শালিসও হয়েছে। শালিসে অভিযুক্ত এনায়েত আলী নিজেই স্বীকার করেছে অন্তত ৭বার মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। মীমাংসার নামে সময়ক্ষেপণ করেছে। এনায়েতের লোকজন নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।

চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, ঘটনাটি প্রায় আড়াই মাস আগের। বুধবার রাতে মামলা রেকর্ড হয়েছে। শিশুটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২০
ইউজি/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।