ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জমি দখল করে আবাসিক এলাকায় চলছে অনুমোদনহীন ইটভাটা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
জমি দখল করে আবাসিক এলাকায় চলছে অনুমোদনহীন ইটভাটা ইটভাটা। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা ভাটায় পুরোদমে চলছে ইট তৈরির প্রক্রিয়া। মালিকরা চুক্তি নবায়নে অস্বীকৃতি জানালেও তাদের জমি জবর দখল করে জোরপূর্বক ইট পোড়ানোর মহাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমির মালিকরা।  

সোমবার (১৬ নভেম্বর) সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার গান্ধাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ‘যমুনা ব্রিকস’ নামে ওই ইটভাটাটিতে পূর্ণদ্যোমে চলছে ইটকাটার কাজ। এর ৩শ মিটারের মধ্যে রয়েছে শহীদ এম মনসুর আলী আইএইচটি ভবন ও পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিস। এছাড়াও ৫শ মিটারের মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজ মাদ্রাসাসহ সরকারি-বেসরকারি প্রায় ১০টি স্থাপনা। আবাসিক এলাকায় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি উপেক্ষা করেই ইটভাটায় আগুন দেওয়ার সব প্রস্তুতি চলছে।  

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৫ সালে আব্দুল করিম নামের এক ব্যক্তি এই ভাটাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময় কোনো প্রকার সরকারি কাগজপত্র ছাড়াই এলাকাবাসীকে অনুরোধ করে তাদের জমি ভাড়া নিয়ে ভাটা পরিচালনা করেন। তিনি দুই বছর আগে সিরাজগঞ্জের গোলাম মোস্তফা নামে একজনের কাছে এই ভাটা বিক্রি করেন। সর্বশেষ ভাটায় ব্যবহৃত জমির মালিকদের সঙ্গে চুক্তি ছিল চলতি বছরের জুন মাসের পর আর ভাটায় তাদের জমি ব্যবহার করা হবে না। কিন্তু সেই চুক্তিনামা উপেক্ষা করে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই এ বছর আবারও ভাটার কাজ শুরু করেন মালিকপক্ষ।  

স্থানীয়রা আরও বলেন, একসময় এখানে ভাটা চলতে দেওয়া হলেও, এখন আর সম্ভব নয়। কারণ ভাটার দুইশ মিটারের মধ্যে সকাল ও বিকেলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার বসে। এছাড়া যমুনার ভাঙনে বিলীন হওয়া শুভগাছা ও গান্ধাইল ইউনিয়নের বেশকিছু জনপদের মানুষের বাসস্থান রয়েছে ভাটার চারপাশ ঘিরে। ভাটার ৫শ মিটারের মধ্যে গড়ে উঠেছে দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১০টির মতো স্থাপনা। এসব দিক বিবেচনা করে ভাটার মালিকের সঙ্গে জমির মালিকরা নতুন করে চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্ত ভাটা মালিক স্থানীয় কিছু দালালদের হাত করে জবরদস্তি করে ভাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কথা বলতে গেলে তার সন্ত্রাসীবাহিনী জোতদারদের নানা হুমকি ধমকি দেন।  

এসব বিষয় উল্লেখ করে রোববার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি দপ্তরে তারা এর প্রতিকার চেয়ে দরখাস্ত দিয়েছেন।  

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে বলে জানালেও তা দেখাতে পারেননি ইটভাটার ম্যানেজার মুক্তার রহমান। জমির মালিকদের সঙ্গে মিটমাট করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।  
  
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, এর আগে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ভাটার মালিককে সতর্ক করা হয়েছিল। রোববার বিকেলে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ