ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লালপুরের খলিসাডাঙ্গা নদীতে বাউত উৎসব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
লালপুরের খলিসাডাঙ্গা নদীতে বাউত উৎসব বাউত উৎসব। ছবি: বাংলানিউজ

নাটোর: নাটোরের লালপুর উপজেলার খলিসাডাঙ্গা নদীতে উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে মাছ ধরার বাউত উৎসব।  

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের খলিসাডাঙ্গা নদীর ময়না ঘাট এলাকায় এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

নদীতে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে মৎস্য শিকারিরা পলোসহ নানা সরঞ্জাম দিয়ে এই মাছ শিকার করেন। এই মাছ ধরার নাম স্থানীয় ভাষায় বাউত উৎসব বলে পরিচিত। বাউত বলতে সাধারণত মাছ শিকারিদের বোঝানো হয়। এ মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন এলাকার মৎস্যপ্রেমীরা একত্রে মিলিত হন। বর্তমানে এই উৎসবটি অনেকটাই বিলুপ্তির পথে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মৎস্য শিকারে আসা সবাইকে উৎসাহ দিতে সকালে ওয়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান নদীতে নেমে মৎস্য শিকারিদের সঙ্গে পলো দিয়ে মাছ শিকারের মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু করেন। এই উৎসব চলে বিকেল পর্যন্ত।

শৌখিন মাছ শিকারিরা হাত পলো, পাউ পলো, নেট পলো ছাড়াও ডোরা জাল, খেয়া জাল, হাতখড়া, বাদাই জাল, ঘের জালসহ নানা উপকরণ নিয়ে নদীতে নেমে পড়েন। বর্ষার পানি নেমে গেলেও নদীতে এখন হাঁটু পানি। আর এই পানিতে পাওয়া যাচ্ছে দেশি প্রজাতির নানা মাছ। এর মধ্যে বোয়াল, গজার, শোল, রুই, কাতলা, চিতল, পুঁটি, খৈলসা, টেংরা, পাবদা, শিং মাছ অন্যতম। এ উৎসবে যোগ দিতে লালপুর, বড়াইগ্রাম, ভবানীপুর, দুরদুড়িয়া, কদিমচিলান ও ওয়ালিয়া এলাকা মৎসপ্রেমীরা বেশি আসেন।

বড়াইগ্রামের ভবানীপুর থেকে আসা শৌখিন মাছ শিকারি উজ্জল বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা এই নদীতে মাছ শিকার করতে আসি। আমি একটা শোল মাছ পেয়েছি। মাছ ধরাটা আমার বড় শখ। ’

ওয়ালিয়া থেকে মাছ শিকার করতে আসা সিরাজুল ইসলাম জানান, পলো দিয়ে মাছ ধরাটা তার নেশা। মাছ পান বা না পান আনন্দটাই বড়। শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিবছর তিনি এই দিনতে মাছ ধরতে আসেন। তবে আগের মতো নদীতে দেশি প্রজাতির মাছ নেই বলে দাবি করেন তিনি।

ওয়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, নদীতে মাছ ধরা বাউত উৎসবটি প্রাচীন গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। এই উৎসবটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। প্রতিবছরই এই বাউত উৎসবে কৃষক, জেলে, ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, চিকিৎসকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। আগামীতেও এই উৎসবটি অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

লালপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সামা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাউত উৎসব গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। দেশের অন্যান্য এলাকায় এই উৎসব বিলুপ্তির পথে। তবে এই এলাকায় ঐতিহ্যটি এখনও টিকে আছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।