ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিদ্যুৎ বিপর্যয়: ঘটনাস্থলে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
বিদ্যুৎ বিপর্যয়: ঘটনাস্থলে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

সিলেট: বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি সিলেটের কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ উপ কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) সঞ্চালন-২ এর প্রধান প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সদস্য প্রকৌশলীকে রাখা হয়েছে।

পিজিসিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সূত্রপাত কিভাবে হলো, তা খতিয়ে দেখছেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে শাস্তি পেতে হয়নি।

গ্রিড উপ কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন রয়েছে পুরো সিলেট। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে কত সময় লাগতে পারে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

আগুনে পুড়ে বিকল হয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতার ট্রান্সফরমার দুটি মেরামতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে পিজিসিবি, পিডিবি ও আরইবির টিম সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি গাজীপুর থেকে নতুন আরেকটি ট্রান্সফরমার আনা হয়েছে।  

তবে বিকেল নাগাদ কাজ সম্পন্ন হবে কিনা এ নিয়ে খোদ কর্মকর্তারাও সন্দিহান রয়েছেন।

বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোকাম্মিল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে আমরা সর্বাত্বক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সরবরাহ কখন দেওয়া যাবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেটে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কুমারগাঁওয়ে ১৩২/৩৩ এমবিএ উপ কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে দুটি উচ্চ ক্ষমতার ট্রান্সফরমার, সার্কিট ব্রেকার, পাওয়ার কন্ট্রোল প্যানেল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে করে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে নগরজুড়ে পানি সমস্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। পানির জন্য হাহাকার করছে নগরের বাসিন্দারা। বিশেষ করে গৃহস্তালি কাজে ব্যবহারের জন্য পানি পুকুর জলাশয় আনতে সক্ষম হলেও খাবার পানির জন্য দুর্ভোগে রয়েছেন মহানগরীর লোকজন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও পানি সরবরাহের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তি আরো প্রকোপ আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে দোকানে বোতলজাত খাবার পানির সংকট দেখা দেওয়ার পাশাপাশি মোমবাতিরও সংকট দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে মহানগর এলাকার বেশিরভাগ দোকানে মোমবাতি ও পানির দাম বাড়তি রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‍বিদ্যুৎ না থাকার কারণে দোকানে মোমবাতি দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়। অনেকের কাছে থাকলেও দামে বিক্রি করেছেন।

নগরবাসীর অনেকে জানিয়েছেন, বুধবার রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে ভোগান্তি আরও বাড়বে। পানি সংকটের কারণে অনেকে পরিবার গ্রামের বাড়িতে পাটিয়ে দিচ্ছেন। অনেকে বিভিন্ন পুকুর-জলাশয় থেকে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহারের জন্য নিতে দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বুধবার সকাল থেকে লোকজন বালতি হাতে জেনারেটর চালিত বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, টিউবওয়েল ও পুকুরের খোঁজে বের হন। তাদের অনেকে ব্যবহারের পানি সংগ্রহ করতে সক্ষম হলেও খাবার পানির সংকটে রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, নগরীতে পাম্পগুলোর একটি জেনারেটর চালিত। সেটি থেকে মেয়রের তত্ত্বাবধানে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পানি সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। তবে পুরো নগরে পানির জন্য হাহাকার থাকলেও সবখানে পানি সরবরাহ করা সম্ভব না।  

এ বিষয়ে জানতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২০
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।