ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রামবাসীর অর্থায়নে নির্মিত সাঁকোতেই চলছে নদী পারাপার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
গ্রামবাসীর অর্থায়নে নির্মিত সাঁকোতেই চলছে নদী পারাপার সাঁকো

নাটোর: নাটোরের সিংড়া উপজেলার হোলাইগাড়ী বাজারে নন্দকুজা নদীতে গ্রামবাসীর অর্থায়নে নির্মিত বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়েই যাতায়াত করছে এ অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তবে স্থায়ীভাবে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি গ্রামবাসীর।

স্থায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হলে এলাকার যোগাযোগ, ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নয়ন ঘটবে। কৃষি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে আসবে ব্যাপক অগ্রগতি।  

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এ অঞ্চলের ১৫টি গ্রামের অবহেলিত মানুষ। সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় স্থানীয়রা হতাশায় পড়েন। পরে স্থানীয়ভাবে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে কিছুটা স্বস্তি পেলেও বর্তমানে ওই বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার মানুষ। স্থানীয় জাগরনী সংঘ ক্লাবের উদ্যোগে বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা সচল রাখতে এই বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়।  

স্থানীয় চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রশিদুল ইসলাম মৃধা বাংলানিউজকে জানান, হোলাইগাড়ী বাজারে নন্দকুজা নদীর ওপর স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করা সাঁকোটি চামারী, হাতিয়ান্দাহ, নাজিরপুর, পুরুলিয়া ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।

তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলকের প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এসব অঞ্চলের হাজারো মানুষ। এখানে সেতুটি নির্মাণ করা হলে শিক্ষা, কৃষি, যোগাযোগসহ ব্যবসা বাণিজ্যে এ অঞ্চল ব্যাপক প্রসার লাভ করবে।  

স্থানীয় জাগরনী সংঘ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম রেজা বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার সবস্তরের মানুষের কথা বিবেচনা করে জাগরনী সংঘ ক্লাব থেকে এই বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। এতে তাদের প্রতিষ্ঠানসহ গ্রামবাসীর আর্থিক সহায়তায় এই কাজটি বাস্তবায়ন করা হয়। সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য আর্থিক সহায়তার জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। পারাপারে কিছু টাকা আদায় করা হয় পথচারীসহ ছোট ছোট যানবাহন মালিকদের কাছ থেকে। এ ব্যাপারে কারো কোনো অভিযোগ নেই, বরং উৎসাহ রয়েছে স্থানীয় জনসাধারণের।

তবে স্থানীয় বাসিন্দা শাহরিয়ার শুভ ও আলামিন অভিযোগ করে জানান, বাঁশের এই সাঁকো পারাপারের জন্য জনপ্রতি ৫ টাকা করে ইজারাদারদের দিতে হয়। এভাবে পারাপারে গরিব মানুষরা হিমশিম খাচ্ছেন। অনেক সময় টাকা না দেওয়ার কারণে ইজারাদার মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এখানে একটি পাকা ও স্থায়ী সেতু থাকলে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হত না এলাকাবাসীর।

সেতু ইজারাদার কিতাব আলী জানান, নদীর দক্ষিণ ও উত্তর পাশে প্রায় ১৫টি গ্রাম রয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ৩০ হাজার খেটে খাওয়া মানুষ উৎপাদিত ফসল নিয়ে বাঁশের ওই সাাঁকোর উপর দিয়ে যাওয়া আসা করেন। গ্রামবাসীর কাছ থেকে নির্ধারিত টাকা আদায় করা হয়। তবে কারো প্রতি কোনো জুলুম করা হয় না। কারো সঙ্গে খারাপ আচরণেরও নজির নেই।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন বানু বাংলানিউজকে জানান, এ বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন। খুব শিগগিরই সেখানে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।