ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পরকীয়ায় বাধা, শরীরে বিষ পুশ করে নানাকে হত্যা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
পরকীয়ায় বাধা, শরীরে বিষ পুশ করে নানাকে হত্যা! নাতনি কামনা খাতুন ও তার প্রেমিক রাশেদ।

চুয়াডাঙ্গা: পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় নাতনির পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় নানা শামসুল শেখ। সেই পথের কাঁটা সরাতে পরকীয়া প্রেমিকের বুদ্ধিতে নানার শরীরে বিষ পুশ করে হত্যা করে নাতনি কামনা খাতুন ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাশেদ।

পরে সে হত্যার দায় চাপানো হয় সাবেক স্বামী হাসানের ওপর।  

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী হাসানকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে তথ্যের ভিন্নতা পায় পুলিশ। কামনা খাতুনকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হলে পরকীয়া প্রেমিক রাশেদকে জড়িয়ে নানা শামসুল শেখের হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি।  

গত ২৯ নভেম্বর রাতে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের বেলগাছি এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। পরে রোববার দুপুরে (৫ ডিসেম্বর) কামনা খাতুন তার প্রেমিক রাশেদকে জড়িত করে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, স্বামী হাসানের সঙ্গে ডিভোর্সের আগেই কামনা রাশেদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। সেই সম্পর্কের কথা জেনে যান নানা। এ বিষয়ে তাকে বকাঝকাও করেন। পরে রাশেদের বুদ্ধিতেই ঘুমন্ত নানার ঘাড়ে কীটনাশক ভর্তি ইনজেকশন পুশ করেন কামনা। ঘুম ভেঙে নানা রাশেদকে দেখেন। কিন্তু হাসানের চেহারার সঙ্গে মিল থাকায় অন্ধকারে তাকেই হাসান মনে করেন। তাই হাসানের নামই বলতে থাকেন। পরকীয়ায় মাতোয়ারা হয়ে নিজ হাতেই নানাকে খুন করেন কামনা।

পুলিশের ভাষ্যমতে, ১৬ বছর বয়সেই কামনা খাতুনের বিয়ে হয় হাসান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। কিন্তু হাসানের নির্যাতনে সেই সংসার টেকে মাত্র ১৮ মাস। হাসানকে তালাক দেন কামনা। শ্বশুরবাড়ি থেকে আবারও ফিরে আসেন নানাবাড়ি। তিন মাস পরে দুইজনের মধ্যে সমঝোতা হলে ফের বিয়ে করেন পরস্পরকে। কামনাও ফিরেন শ্বশুরবাড়ি। তবে এবার সংসার টেকে মাত্র ৩ মাস। তাই আবারও নানাবাড়ি ফিরেন কামনা। নানাবাড়ি ফেরার পর আবারও তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন হাসান। শুধরে যাওয়ারও প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু এবার কামনার আর মন গলে না। এতে ক্ষেপে যান হাসান। মোবাইলেই গালিগালাজ করেন, হত্যার হুমকিও দেন। এর পর থেকে হাসানের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয় কামনার। এ সুযোগ কাজে লাগায় পরকীয়া প্রেমিক রাশেদ।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, শামসুলের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই হাসানের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করে পরিবার। মৃত্যুর আগে তার নামও বলে যান শামসুল। তাই গ্রেফতার করা হয় হাসানকে। কিন্তু কামনাকে নির্যাতন, হত্যার হুমকির কথা স্বীকার করলেও হত্যার কথা অস্বীকার করেন হাসান। পরে নানা ঘটনা পরম্পরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় কামনাকে। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে নাটকীয় মোড় পায় মামলা। কামনা স্বীকার করেন, ঘাড়ে ইনজেকশন পুশ করে নানাকে নিজেই খুন করেছেন তিনি। যা তিনি আদালতেও স্বীকার করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।