ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি

চরফ্যাশনে নিখোঁজ ২০ জেলে পরিবারে শোকের মাতম

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২১
চরফ্যাশনে নিখোঁজ ২০ জেলে পরিবারে শোকের মাতম নিখোঁজ জেলেদের পরিবারে শোকের মাতম

ভোলা: বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) তিন দিনেও সন্ধান মেলেনি ভোলা সদর ও চরফ্যাশনের নিখোঁজ ২০ জেলের। এতে জেলে পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম।

ট্রলার দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন কারও বাবা, কারও সন্তান, কারও বা স্বামী। পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তিকে না পেয়ে শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন পরিবারগুলোর সদস্যরা।  স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে চরফ্যাশনের তিনটি এবং ভোলা সদরের একটি গ্রাম।  

সেই দুর্ঘটনায় হাফিজ নামে এক জেলে জীবিত উদ্ধার হলেও অন্যদের না পেয়ে নিখোঁজ জেলে পরিবারে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে গেছে। নিখোঁজরা জীবিত ফিরবেন, এমন আশা ও অপক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন জেলে পরিবারগুলো।

নিখোঁজ জেলেরা হলেন- বাচ্চু মাঝি, ফারুক, জাভেদ, আলামিন, মালেক, ইউসুফ, জলিল, রফিক, মাসুদ, বাচ্ছু, নুরুল ইসলাম, হারুন, নূর আলম, বাশার, সুমন, শাহিন, দীন ইসলাম, নাগর মাঝি ও জসিম। তাদের বাড়ি উপজেলার আব্দুল্লাপুর, জাহানপুর, নীল কমল ও ভোলা সদরের ইলিশা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

নিখোঁজ জেলে ইউসুফের ছেলে সাইদুল কান্না জড়িত কন্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তিন ভাই ও এক বোন। সবাই পড়াশোনা করছি। আমাদের বাবা নদীতে মাছ ধরেন। ওই টাকায় আমাদের সংসার চলে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনায় বাবা এখনো নিখোঁজ। এখন আমাদের কে দেখবে। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই।  

নিখোঁজ জেলে খালেকের ছেলে আ. রহিম বলেন, বাবা মাছ ধরা শেষে করে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল, সেই যে গেল আর ফিরে এলো না। বাবার চিন্তায় আমাদের পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে।

নিখোজ জেলেরা বেঁচে আছেন কি না, তাও জানা নেই পরিবারগুলোর। তবে তারা ঘাতক  ট্রলারের বিচারের দাবি করেন।
চরফ্যাশন উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নেমান বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের জন্য কোস্টগার্ড চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা এখনো ঢালচর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এসএল আর-৫ নামে একটি ট্রলারের ধাক্কায় এ ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। ওই ট্রলারের নামে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও নিখোঁজ জেলে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

গত ০৫ ডিসেম্বর (রোববার) দিনগত রাতে মাছ ধরার শেষে ফেরার পথে একটি ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কায় ২১ জেলে নিয়ে কামাল খন্দকারের একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। এতে এক জেলে উদ্ধার হলেও এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ২০ জেলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।