ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘জাওয়াদে’র প্রভাবে টানা বর্ষণে কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২১
‘জাওয়াদে’র প্রভাবে টানা বর্ষণে কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষতি

বাগেরহাট: বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে পাকা ধান, ধান-গমের বীজতলা, রবি শস্য ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  

মাঠে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে ধান ঝড়ে পড়েছে।

পানিতে পচে গেছে বোরো ধানের বীজতলা। হঠাৎ বৃষ্টিতে বিপুল পরিমাণ শীতকালীন সবজির গোড়া পচে গেছে। রোববার (০৫ ডিসেম্বর) থেকে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) টানা বৃষ্টির ফলে অনাকঙ্ক্ষিত ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, টানা দুইদিনের বৃষ্টিতে বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১৫০ হেক্টর পাকা আমন ধান আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া ২০৭ হেক্টর বোরোর বীজতলা, গমের বীজতলা ১৭ হেক্টর, ১৩৭ হেক্টর সরিষা ক্ষেত, ১৬১ হেক্টর খেসারি, ৩০ হেক্টর মসুর ডাল, ৩৫ হেক্টর শীতকালীন সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে টাকার অংকে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা জানাতে পারেনি কৃষিবিভাগ। তবে স্থানীয় কৃষকদের দাবি এই ক্ষতির পরিমাণ দিগুনের থেকেও বেশি।

শরণখোলা উপজেলার আমড়াগাছিয়া গ্রামের বাদশা খলিফা বলেন, আমরা যারা কৃষক, আমাদের সব শেষ। মোটা ধান কেটে মাঠে রেখে দিছিলাম। চারদিনের বর্ষায় সব শেষ হয়ে গেল।

একই উপজেলার বাদশা খলিফা, ইয়াকুবসহ আরও অনেকে বলেন, ইয়াসের ধাক্কায় আমনের বীজতলা নষ্ট করে দিল। খুব কষ্টে বীজ যোগার করে, ধান রোপণ করেছিলাম। এখন বৃষ্টির কারণে পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। আবার কারও কারও কাটা ধানও রয়েছে জমিতে। এদেরতো একেবারে মাথায় হাত।

বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর এলাকার মহিবুল্লাহ বলেন, আমাদের বাৎসরিক আয়ের একটা বড় অংশ আসে শীতকালীন সবজি থেকে।  কয়েকদিন পরেই লাল শাক, বেগুন, মূলা, পাতা কপি, ফুলকপি ও ওলকপি বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে শিকর পচে গেছে। রোদ পেলে বেশিরভাগ সবজি ঢলে পড়বে। খুব বড় ক্ষতি হয়ে গলে আমাদের।

কুচয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের বোরো চাষি হেমায়েত মোল্লা বলেন, বীজতলায় কেবলমাত্র ধানের চারা এসেছিল। টানা বৃষ্টিতে আমাদের বোরো ধানের চারাগুলো পচে গেছে। এখন আবার ধান কিনতে হবে, প্রক্রিয়াজাত করে আবার বুনতে হবে। অনেকদিন পিছিয়ে গেলাম আমরা। শুধু হেমায়েত নয়, বাগেরহাট সদর, কচুয়া, চিতলমারী, মোল্লাহাট, মোরেলগঞ্জ, ফকিরহাট উপজেলার বেশকিছু বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে এবারের বৃষ্টিতে।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, টান বর্ষণে পাকা ধান, ধানের বীজতলা, গমের বীজতলা, শীতকালীন সবজি ও বেশকিছু রবি শস্যের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। মূলত টাকার অংকে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, কত কৃষকের ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়টি এখনই বলা যাচ্ছে না। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ০৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।