ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিক্রি করা সেই নবজাতককে ফিরে পেলেন মা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২২
বিক্রি করা সেই নবজাতককে ফিরে পেলেন মা

চাঁদপুর: অবশেষে মায়ের কোল ফিরে পেল বিক্রি করা সেই নবজাতক।

বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে নবজাতকটিকে  উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী মো. শরীফুল হাসান।

শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইউএনও শরীফুল হাসান বাংলানিউজকে বিষিয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, গত ২৬ জানুয়ারি মতলব উত্তর উপজেলার পালস-এইড জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন তামান্না বেগম। পরে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকার প্রবাসীর স্ত্রী সীমলা আক্তারের কাছে ৫০ হাজার টাকার বিনিময় নিজ সন্তানকে বিক্রি করে দেন মা।

এ ঘটনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে প্রশাসনের সহায়তায় মা এর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয় নবজাতককে।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী মো. শরিফুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা নবজাতকটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর করি। পরে জানতে পারি, ষাটনল এলাকার প্রবাসীর স্ত্রী সিমলা আক্তার নবজাতকটিকে লালন-পালন করার জন্য নেন। সিমলা তারের তিনজন কন্যা সন্তান রয়েছে। পরবর্তীকালে নবজাতকটির অবস্থান জানতে পেরে আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে নবজাতকটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছি। নবজাতকের মা তার নানী আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন, তারা হতদরিদ্র হওয়ায় স্বেচ্ছায় নবজাতকটিকে ওই নারীর কাছে দিয়েছিলেন। নবজাতককে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। তাছাড়া আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ওই মায়ের হাতে ৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।

সন্তান নিজের কাছে ফিরে পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মা তামান্না বেগম। তিনি বলেন, আমরা গরিব বলে হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে নিজের সন্তানকে বিক্রি করে হাসপাতালে বিল ও ওষুধের খরচ দিয়েছি। কিন্তু একটি মুহূর্তের জন্য আমার বাবুকে মন থেকে ভুলতে পারছিলাম না। অবশেষে আমার সন্তান ফিরে পেয়ে আমি অত্যন্ত খুশি। আমি প্রশাসন ও ওই পরিবারের সদস্যদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

জানা গেছে, দুই সন্তানের জননী তামান্না বেগম গত ২৬ জানুয়ারি প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হয় মতলব উত্তর উপজেলার পালস-এইড জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি হাসপাতালে। সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান। হাসপাতাল ও ওষুধ খরচের ব্যয় বহন করতে না পেরে ৫০ হাজার টাকায় বাধ্য হয়ে নাড়ি ছেড়া ধন বিক্রি করেন মা।  

তামান্না ছেংগারচর পৌরসভার বারোআনি গ্রামের বাসিন্দা। পাঁচ বছর আগে পার্শ্ববর্তী হানিরপাড় গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে দিনমজুর আলমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

** ক্লিনিকের বিল দিতে নবজাতক বিক্রি!

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।