ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সিআইডির ইন্সপেক্টর সেজে ধরা পড়লেন সিআইডির জালে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২২
সিআইডির ইন্সপেক্টর সেজে ধরা পড়লেন সিআইডির জালে

ঢাকা: অনলাইনে হেনস্তার শিকার এক নারীকে সহায়তা করতে সিআইডি ইন্সপেক্টর সেজে এগিয়ে আসেন কামরুল। নিজেকে সাইবার এক্সপার্ট দাবি করে অপরাধীকে ধরতে কৌশলে ওই নারীর ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নেন।

ছবি ও ভিডিও পাওয়ার পরই পাল্টে যায় কামরুলের চেহারা। তিনি কাজের জন্য ভুক্তভোগী নারীর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন এবং তার সঙ্গে রাত্রিযাপনের কথা বলেন। অন্যথায় সেসব ছবি-ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন কথিত সিআইডি ইন্সপেক্টর কামরুল।

অবশেষে সিআইডির দ্বারস্থ হলে কুমিল্লার কোতয়ালী থানা থেকে কামরুলকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

কামরুল নিজেকে সিআইডির ইন্সপেক্টর মেহেদী দাবি করে ওই নারীকে সহায়তার সুযোগ নেন। বিশ্বস্ততা অর্জনে আরেকজনকে ভুয়া এসপি সাজিয়ে কথা বলিয়ে দেন কামরুল।

ঘটনার বিবরণে সিআইডি জানায়, অনলাইনে এক নারীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সংবাদের ফুটেজ ধরে রিপোর্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রতারক কামরুল। নারী নির্যাতন মামলার সেই বাদীর নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে নিজেকে ফোনে সিআইডি ইন্সপেক্টর মেহেদী হিসেবে পরিচয় দেন।

মামলায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আসামিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ভয়ভীতি দেখান। আসামিকে মাদকের অন্য একটি মামলা দিতে হবে বলে বাদীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকাও নেন তিনি। আরেকজনকে ভুয়া এসপি সাজিয়ে বাদীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন।

বিশ্বস্ততা অর্জনের একপর্যায়ে নারী নির্যাতন মামলা প্রমাণ করার জন্য কামরুল ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কৌশলে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও নেন। ওই নারীও সিআইডি অফিসার ভেবে একান্ত গোপনীয় সব ফুটেজ তাকে দিয়ে দেন।

ফুটেজ পেয়েই প্রতারকের কথাবার্তার ধরন পাল্টে যায়। প্রতারক কামরুল এ কাজের বিনিময়ে মেয়েটির কাছে দুই লাখ টাকা এবং তার সঙ্গে রাত্রিযাপনের প্রস্তাব দেন। অন্যথায় ভুয়া আইডি খুলে ছবি ভাইরাল করার হুমকি দেন তিনি।

ওই নারী উপায় না দেখে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিটে আসেন। সেখানে ইন্সপেক্টর মেহেদী নামের কাউকে খুঁজে পাননি। ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি সাইবার পুলিশ সেন্টার কামরুলকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করে।

সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ জানান, গ্রেফতার কামরুলের কাছ থেকে উদ্ধার ডিজিটাল আলামতের সূত্র ধরে জানা যায়, দীর্ঘদিন তিনি নিজেকে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মেয়েদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।

এসএসপি মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ আরও জাননা, কামরুলের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত সিল, বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো চিঠির কপি, ফেসবুকের পাঁচটি ভুয়া আইডি, বিকাশ অ্যাকাউন্ট ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২২
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।