ঢাকা, শনিবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা ছিন্নমূল মানুষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২
সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা ছিন্নমূল মানুষ

ঢাকা: রাজধানীর ছিন্নমূলের তথা দরিদ্র শ্রেণির বসবাস বস্তিতে। কল্যাণপুরের বস্তিতে লাগা আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন সেই হতদরিদ্র মানুষরা।

তারা বস্তিতে তিল তিল করে সাজিয়েছিলেন স্বপ্নের সংসার।

আয়েশা বেগম নামের এক গৃহিণী বলেন,  আগুন যখন লাগে, তখন ঘরেই ছিলেন তিনি। তার স্বামী সুমন রিকশাচালক। আগুন লাগার সময় সুমন রিকশা চালাচ্ছিলেন। খবরে বস্তিতে আসেন। ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই।

তিনি বলেন, ঘরে টিভি, খাট, আসবাবপত্র, হাঁড়িপাতিল সব পুড়ে গেছে। কিছুই বের করতে পারেননি। এখন সন্তানসহ সুমন-আয়েশার ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে।

আলী মিয়া বস্তিতে প্রায় ৯ বছর ধরে বসবাস করেন। রং মিস্ত্রীর কাজ করে বস্তিতে ৫টি কক্ষ করে ৫টি পরিবারকে ভাড়া দিয়েছেন। ৮৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ এখন কিছু করতে পারেন না, ভাড়া দিয়ে যা পেতেন তাতেই সংসার চলতো। তিল তিল করে গড়ে তোলা এই বৃদ্ধের সবকিছুই পুড়ে গেছে।  

তিনি বলেন, আগুন লাগার সময় বাসার পাশেই ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আগুন ছড়িয়ে পরায় কিছুই বের করতে পারিনি। চোখের সামনেই এক নিমিশে সব শেষ হয়ে গেল। এখন কই থাকব আর কেমনে চলব জানি না।

শাহজাহান মোল্লার (৬৪) গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী। ৫ বছর ধরে এই বস্তিতেই ভাড়া ছিলেন। প্রায় ১৫ বছর আগে এখানে একটা ঘর কেনেন, সেখানেই থাকতেন।

২০০৪ সালে দুর্ঘটনায় পঙ্গু শাহজাহান মোল্লার ছয় মেয়ের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়েছে। বাকি ৫ মেয়ে নিয়ে বসবাস করা এই বাবার বেশিরভাগ সময় মসজিদেই কাটতো। আগুনের সময় দারুসসালাম মেইনরোড মসজিদে নামাজে ছিলেন। এশার নামাজ শেষে বস্তিতে ফিরতেই শোনেন আগুনের কথা। নিজের ঘর পর্যন্ত যাওয়ার আর সুযোগ মেলেনি। চারদিকে ততক্ষণে আগুন আর আগুন। মুহূর্তের মধ্যেই তার সাজানো সংসারের সবকিছু পুড়ে ছাই।

রোববার (২০ মার্চ) ৮টা ৫০ মিনিটে কল্যাণপুর ৯ নম্বর বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিটের প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২
পিএম/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।