ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

‘পানির অপচয় রোধে রিসাইক্লিংয়ের উদ্যোগ প্রয়োজন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
‘পানির অপচয় রোধে রিসাইক্লিংয়ের উদ্যোগ প্রয়োজন’

ঢাকা: অপচয় রোধে গৃহস্থালি এবং সকল শিল্প-কলকারখানায় ব্যবহৃত পানি রিসাইক্লিংয়ের উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে অব্যবহারযোগ্য পানি ব্যবহারযোগ্য করতে বড় বড় সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কথাও জানান মন্ত্রী।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু ’তে ‘বিশ্ব পানি দিবস-২০২২’ উপলক্ষে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের অনেকে রিসাইক্লিংয়ের কাজ কঠিন বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু এটি অসম্ভব নয়। পৃথিবীর বহু দেশ রিসাইক্লিং করে পানি ব্যবহার করছে। আমাদের দেশেও এটি চালুর উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য দরকার সার্বিক একটি ব্যবস্থাপনা। যে সকল প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কলকারখানার ব্যবহৃত পানি রিসাইক্লিংয়ের সক্ষমতা রয়েছে তাদের অবশ্যই করতে হবে।

তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা শহর যেভাবে গড়ে উঠেছে তাতে প্রত্যেক বাসায় পাইপ লাইন দেওয়া অথবা রাস্তা খুঁড়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে ট্রিটমেন্ট প্লান্টে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দরকার সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। এজন্য প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক নিশ্চিত করতে হবে। এরপর সেখান থেকে  ট্রিটমেন্ট প্লান্টে নিয়ে পানি শোধন করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের জন্য মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ করতে ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, আমি আশা করি দেশ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লক্ষ্য অর্জন করবে। এ লক্ষ্যে সারাদেশে অনেকগুলো ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে এবং হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য যত গভীরে যাওয়া হবে আর্সেনিক ছাড়াও অনেক হেভি মেটাল রয়েছে যেগুলো পানির সঙ্গে উঠে আসবে। শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। তাই ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে।

তিনি বলেন, যেসব এলাকায় সংকট রয়েছে সেখানে পানি সরবরাহের জন্য ন্যাশনাল গ্রিড লাইন স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সারা দেশে অনেক ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে। এসব জোনে প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কলকারখানায় প্রচুর পরিমাণ পানি প্রয়োজন হবে। তা সামনে রেখে কাজ করছে সরকার। দেশের পানির প্রধান উৎসগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। যেমন, মেঘনা থেকে মিরসরাই ইকোনমিক জোনে পানি নেওয়ার বিষয়ে এখন গবেষণা চলছে।

রাজধানীতে জোনভিত্তিক পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের দাম নির্ধারণ করার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ অভিজাত এলাকায় বসবাসরত মানুষ যে নাগরিক সুবিধা ভোগ করেন যাত্রাবাড়ী অথবা পুরান ঢাকার মানুষ তা পায় না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমতাভিত্তিক উন্নয়নের কথা বলেছেন। তিনি সমাজ ও মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করার জন্য দেশ স্বাধীন করেননি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। মানুষ গ্রামেই উন্নত সুযোগ-সুবিধা পাবে। তাই উন্নত জীবন ব্যবস্থার জন্য সবার ঢাকায় আসার প্রয়োজন নেই।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত, ইউনিসেফ এবং ডব্লিউএইচও-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২২
জিসিজি/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।