ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আজ নতুন প্রজন্ম মন খুলে আঁকতে পারছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২২
আজ নতুন প্রজন্ম মন খুলে আঁকতে পারছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করার প্রক্রিয়া চলেছিল। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণ হচ্ছে, নতুন প্রজন্ম আজ মন খুলে আঁকতে পারছে। মনের ভাষা ছবিতে প্রকাশ করছে তারা।

শনিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মুজিব শতবর্ষের স্মারকগ্রন্থ ‘অনশ্বর পিতা’র মোড়ক উন্মোচন ও ‘রং তুলিতে আঁকি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খুব কাছ থেকে আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। তখন আমি ডিগ্রি ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। আমি উদগ্রিব থাকতাম কখন তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন। তিনি সবসময় প্রস্তুত থাকতেন। বার বার জেলেও গেছেন। দিনক্ষণ হিসেব করে কারা কর্তৃপক্ষ পরে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু ৩ হাজার ৫৩ দিন জেলেই কাটিয়েছেন। কারাগারে বসেই তিনি অনেক ইতিহাস লিখে গিয়েছেন। আবার জেল থেকে বাইরে বের হলেই প্রান্ত থেকে প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কারাগারের রোজনামচা লিখে গেছেন। সিক্রেট ডকুমেন্টসে তারই প্রমাণ পাচ্ছি। এসবিতে রক্ষিত ছিল সেই সিক্রেট ডকুমেন্ট।

ভাষা আন্দোলনের শুরুতেই পাকিস্তানের জাতির পিতা কায়েদে আজমের মুখের ওপর ভাষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু প্রতিবাদ করেছিলেন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে কায়েদে আজম যখন ঘোষণা করেন—উর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা। তখন তার মুখের ওপর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন—না না বাংলা হবে রাষ্টভাষা। জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার দৃশ্য তিনি মানতে পারেননি। তখন থেকেই তার শুরু জেলে যাওয়া-আসা।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মার্চের ৩ তারিখে আমরা পতাকা উড়িয়ে জানিয়েছিলাম—আমরা স্বাধীন দেশ চাই। নিরঙ্কুশ বিজয়ের পরও বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছিল না। তাই তিনি ছাত্রনেতাদের বলতেন—তোমরা তৈরি থাকো, যুদ্ধ ছাড়া আমাদের গতি নাই। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। তবে তিনি আলোচনার পথ বন্ধ রাখেননি। অপেক্ষা করলেন। ২৪ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেছেন—রক্তের ওপর পা দিয়ে সিদ্ধান্ত বদলাতে পারবো না। ২৫ মার্চ পর্যন্ত কিছু হচ্ছিল না। আলোচকরা চলে যাচ্ছিল। রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম, আমরা পায়ের স্যান্ডেল খুলে ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ করেছিলাম। ওই রাতেই অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলো। সবকিছু তছনছ করে দেবার পরিকল্পনা থেকে। আমরা তেজগাঁওয়ে গাছ কেটে রাস্তা বন্ধ করেছিলাম। প্রথম বাধা পেলো জয়বাংলা স্লোগানে।

তিনি বলেন, রাজারবাগ পিলখানায় ভাগাভাগি করে চলে যাই। মৃত্যু অবধারিত জেনেও সম্মুখযুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বীর বাঙালি। এই দুঃসাহস আমরা পেয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে। যে শক্তিতে আমরা বলীয়ান। রাজারবাগের পুলিশও সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। শুধু রাজারবাগ নয়, সারাদেশেই সহযোগিতা করেছিল। তখন থেকে শুরু লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ। সে লড়াইয়ে আমরা নয় মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম।

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

অনুষ্ঠানে পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ, র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ছাড়াও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২২
এসজেএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।