ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

এসডিজি অর্জনে শহর ও গ্রামাঞ্চলের বৈষম্য দূর করতে হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
এসডিজি অর্জনে শহর ও গ্রামাঞ্চলের বৈষম্য দূর করতে হবে

ঢাকা: এসডিজি অর্জনে শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে হবে। ঊর্ধ্বমুখী বরাদ্দ হলেও বৈষম্য কমছে না বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, পিপিআরসি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, ফানসা বিডি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্ট্রিগিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, এন্ড ওয়াটার পোভার্টি, এমএইচএম, ইউনিসেফ এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত বাজেট পূর্ব এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়েছে।

সোমবার (৩০ মে) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

পিপিআরসির চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গ্রামাঞ্চলে অবস্থা এখনও সন্তোষজনক নয় নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও  হাইজিনের ক্ষেত্রে। ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনের ক্ষেত্রে শহরের মতো গ্রামেও পর্যাপ্ত বরাদ্দ করতে করতে হবে।

এসডিজি অর্জনে ৭ বছর চলে গেছে, আর ৮ বছর বাকি আছে। এই ৮ বছরে আমাদের সঠিক নীতি মেনে কার্যকর প্রকল্প নিতে হবে। কোভিড চলে গেছে বলে হাত ধোয়ার দরকার নেই, এমনটা নয়, হাইজিন বাস্তবায়নে সবসময়ই পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।  

ড. হোসেন জিল্লুর বলেন, চারটা বড় শহরের মধ্যে ওয়াসার সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসা। রাজশাহী মোটামুটি পেলেও খুলনা একেবারেই কম বরাদ্দ পায়। ওয়াসার মোট বরাদ্দের মাত্র ৩ শতাংশ পায় খুলনা ওয়াসা। শহরাঞ্চলের মাঝেও বাজেট বরাদ্দে বৈষম্য কমাতে হবে।

ক্লাইমেট হটস্পট চিহ্নিত যেহেতু হয়েছে সেহেতু এটা নিয়ে কাজ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন ড. জিল্লুর।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা, এসডিজি-৬ অর্জনের ওয়াশ খাতে বরাদ্দের ব্যবধান হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা এবং সুষ্ঠু ও ন্যায্য বরাদের কথা উল্লেখ করেন বক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়াটারএইডের সহযোগিতায় পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) ওয়াশ খাতে বাজেট বরাদ্দের বিশ্লেষণে তুলে ধরা হয়।

বিশ্লেষণে বলা হয়, এডিপির মোট বরাদ্দের (২৬৮,৭৯৩ কোটি টাকা) হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বরাদে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫.৪৪ শতাংশ (১৪,৫১৭ কোটি টাকা)। এ সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলে  বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এসব এলাকায় বরাদ্দ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ বছর আগের তুলনায় ৭২ শতাংশ কমেছে।

বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে প্রত্যন্ত এলাকা, চর, পাহাড়ি উপকূলীয় অঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ শতাংশ তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ অনুন্নত এসব এলাকায় বরাদ্দের প্রয়োজন শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি। তাই, আসন্ন বাজেটে প্রান্তিক একালাগুলোর প্রয়োজন বিবেচনা করা উচিত।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের জন্য ছয়টি সুপারিশ সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপন করা হয়—

১। এসডিজি ৬.১.১ এবং এসডিজি ৬.২১ অর্জন নিশ্চিতে বরাদ্দ বাস্তবায়নে মানসিকতার পরিবর্তন এবং কার্যকর এডিপি প্রকল্প নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা।

২। অত্যন্ত প্রত্যন্ত এলাকায় বরাদ্দ বাড়ানো ও আন্তঃশহর বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।

৩। ওয়াশ খাতে এডিপি বরাদের আরও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের সমাধান করা।

৪। হাইজিনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য শুধুমাত্রা বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে না; পাশাপাশি, কোডিড পরবর্তী বাস্তবতায় নগরে স্বাস্থ্য, স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও নারীদের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

৫। যেসব এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়বে সেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ওয়াশের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং এতে সুযোগ বাড়ানো।

৬। শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ বাজেট বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, পিপিআরসির সিনিয়র ফেলো মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
এনবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।