ঢাকা: পাবনার গুণী সাংবাদিক রণেশ মৈত্রকে সবাই ডাকেন দাদু বলে। আর চার মাস পর ৯০ বছরে পা রাখবেন একুশে পদকে ভূষিত এই সাংবাদিক।
সোমবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১ আয়োজন অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের গল্প বললেন দাদু।
এ সময় বসুন্ধরা গ্রুপ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি একটি বিরাট প্রতিষ্ঠান। বসুন্ধরার কারো সঙ্গে আমার পরিচয় না থাকলেও তারা আমাকে গুণীজন সংবর্ধনার জন্য নির্বাচিত করেছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে সাংবাদিকরা আহত হচ্ছেন উল্লেখ করে এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন রণেশ মৈত্র। তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে দেখেছি। এক সময় পাকিস্তানের নীতি-আদর্শের বিরুদ্ধে রাজপথে মিছিল করেছি। কোনো জায়গায় ব্যর্থ হইনি। জেল খেটেছি প্রায় ১২ বছর। গোটা পাকিস্তান আমলের অধিকাংশ সময় আমি জেলে ছিলাম। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দেড় বছর জেল খেটেছি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের উদ্দেশে প্রবীণ এই সাংবাদিক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। কারণ এই আইনের দ্বারা সাংবাদিকরা আহত হয়েছে। যেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের ছেলেরা এই আইন দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। সুতরাং এই আইন থাকতে পারে না।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বিষয়ে রণেশ মৈত্র বলেন, এই ট্রাস্টের মিটিং বসানো নাকি দুরুহ ব্যাপার। আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, তখন স্থানীয় জেলা প্রশাসক আমাকে একটি দরখাস্ত চাইলেন। সেই দরখাস্তে ডিসি রিকমেন্ড করেছেন। কিন্তু ট্রাস্ট থেকে আজ পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এটি আমাদের জন্য খারাপ অভিজ্ঞতা। তথ্যমন্ত্রীকে এসব জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রণেশ মৈত্র বলেন, ষাটোর্ধ্ব যাদের এখানে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে তাদের প্রত্যেকের বক্তব্য শুনলে এটি একটি বিরাট বই আকারে প্রকাশ করা যেত। ৬৪ জেলা থেকে আগত গুণীজন সাংবাদিকরা একাধারে যেমন রাজনৈতিক প্রতিবেদন করেন, একইভাবে অপরাধ ও বিনোদনসহ নানা ধরনের প্রতিবেদন সংগ্রহ করেন। এ জাতীয় সংবাদ সংগ্রহের পাশাপাশি নিজের মোবাইল দিয়ে এমনকি ক্যামেরা পরিচালনা করে ছবি তোলেন। মফস্বলে যারা সাংবাদিকতা করেন তাদের অনেক বড় ভূমিকা গণমাধ্যমে রয়েছে।
এ সময় তিনি বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের উদ্যোগ আগামী দিনে অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও এ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ঢাকায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে মফস্বলে কাজ করা সাংবাদিকদের সুখ-দুঃখে খবর রাখার অনুরোধ করেন রণেশ মৈত্র।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ