ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মায় অবৈধ ড্রেজিং বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২২
পদ্মায় অবৈধ ড্রেজিং বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন 

মানিকগঞ্জ: পদ্মা নদীতে অপরিকল্পিত ড্রেজিং, বালু উত্তোলন বন্ধ ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘পদ্মা ভাঙন থামাও হরিরামপুর বাঁচাও’ ফেসবুক গ্রুপ।  

রোববার (৩ জুলাই) দুপুরে ঘণ্টাব্যাপী উপজেলা চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

হরিরামপুর উপজেলার ছাত্র সমাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ছাড়াও সব শ্রেণীপেশার মানুষ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।  

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কিছু সংখ্যক লোক রাজনৈতিক দলের পরিচয় ব্যবহার করে পদ্মা নদী থেকে বালু তুলে হরিরামপুরের ক্ষতি করছেন আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজারো মানুষ। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান।

কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল বলেন, অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে পদ্মা নদী পাড়ে ভাঙন বেড়েছে। অনেকের বাড়িঘর ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা ভবনটি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।  

পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, পদ্মা পাড়ের সক্রেটিসখ্যাত বাবু হরিপদ সূত্রধর বলেন, ১৯৭৭ সালে পদ্মায় প্রথম বাড়ি ভাঙছে এ পর্যন্ত আমার বাড়ি ৬ বার ভেঙেছে আবার অনেকের বাড়ি ১০ বারও ভেঙেছে। এই ভাঙা গড়ার কষ্ট বেদনা কতটুকু আমি তা জানি। কিছু মানুষ রূপি শয়তান পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে মানুষকে যেমন অত্যচার করছে ঠিক তেমনি নদীর সঙ্গেও বৈরী আচরণ করছে। এদের প্রতিহত করতে হবে তা না হলে নদীমাতৃক দেশ হারাবে তার সৌন্দর্য।  

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- বয়ড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিদুর রহমান মহিদ, হারুকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা পবিত্র কুমার, যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান চৌধুরী মিল্টন, কৃষক লীগের সদস্য সচিব শহীদুর রহমান শহীদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ। এসময় ফেসবুক গ্রুপের দেড় শতাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।  

তবে এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীর হরিরামপুর ও ঢাকা জেলার দোহারের শেষ সীমানায় বালু উত্তোলন করে কিন্তু আমরা অভিযান পরিচালনা করতে গেলে আমাদের সীমান্ত থেকে ওই (দোহার) সীমান্তে চলে যায়। তখন অভিযান বন্ধ করে চলে আসতে হয়। তবে ঢাকার দোহার উপজেলা প্রশাসন এবং হরিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য গত শনিবার জেলা প্রশাসক স্যারকে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।  

জানা যায়- চলতি বছরের ২৭ মে দেশের শীর্ষস্থানীয় নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে ‘পদ্মায় ছাত্রলীগ সভাপতির অবৈধ বালু বাণিজ্য, প্রশাসন নীরব’ এই শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়। নিউজ প্রকাশিত হওয়ার পরপর উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের পর বেশ কিছু দিন বন্ধ হয়ে যায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন, হঠাৎ করেই ওই দুই উপজেলার বালু খেকরা পুনরায় নদী থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।