ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শাহজাদপুরে ভাঙনে সব হারানো পরিবারগুলোর মানবেতর জীবনযাপন  

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২২
শাহজাদপুরে ভাঙনে সব হারানো পরিবারগুলোর মানবেতর জীবনযাপন


  বাঁধে অবস্থান নিয়েছেন বাড়ি হারা লোকজন

সিরাজগঞ্জ: সম্প্রতি যমুনার অব্যাহত ভাঙনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের মার্জান, ফকিরপাড়া ও বিনোটিয়া গ্রামের চারটি পয়েন্টের অন্তত ২০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনে সব হারানো মানুষগুলো এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

 

বিনোটিয়া গ্রামের বেল্লাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও আব্দুল করিমসহ অনেকেই জানান, ১২ বছর ধরে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধটি সংস্কার না করায় দুর্বল হয়ে এর বিভিন্ন স্থানে ধসে যেতে শুরু করেছে। এ কারণে এ অঞ্চলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ২০টি বাড়িঘর ছাড়াও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে ওই অঞ্চলের শত শত পরিবার। তবে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।  

ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে পরিবার নিয়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন মার্জান গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, আবু জাফর, হালিমা খাতুন ও জয়ফল খাতুনসহ অন্তত ১৫/২০ জন।  

তারা বলেন, অব্যাহত ভাঙনের ফলে আমাদের গ্রামের অন্তত ১৫টি বাড়ি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। এক কাপড়ে ঘর থেকে বের হয়ে এসে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি।  

তারা অভিযোগ করেন, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটালেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও উপজেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে কেউ তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন না।

গালা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন বলেন, বাঁধে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতি পরিবারে ১৫ কেজি চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এরপর বাঁধটির রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার হয়নি। অপরদিকে একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বছরের পর বছর ধরে বালু উত্তোলন করছে। এ কারণেই এখানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।  

ইউএনও তরিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ভাঙন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যারা বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের তালিকা করে প্রয়োজনীয় খাবার বিতরণ ও রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে তাবুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ওই অঞ্চলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করা হয়েছে। ভাঙন এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।