ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতেও যানজটে ভোগান্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২২
সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতেও যানজটে ভোগান্তি

ঢাকা : সকাল ৯টার পর থেকে সারাদিনই রাজধানী জুড়ে ব্যাপক যানজট ছিল। সন্ধ্যার দিক থেকে এর মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

রাত ঘনিয়ে আসছে, যানজটের কমতি নেই।

রোববার (৩১ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন রুটে ব্যাপক যানজট দেখা গেছে। বিশেষ করে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে খিলক্ষেত হয়ে বিমানবন্দর, উত্তরা; বনানী, মহাখালী, গুলশান; মালিবাগ থেকে রামপুরা হয়ে বাড্ডা নতুন বাজার, কুড়িল পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

সকাল থেকে যানজট শুরু হলে স্কুল-কলেজ-অফিস যাতায়াতকারীরা ভোগান্তিতে পড়েন। বিকেল থেকে যানজটের তীব্রতা বাড়ে। এ সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-আদালত ছুটি হওয়ায় যানজট বেড়ে যায়।

কুড়িল থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়কে যানবাহনের চলাচলে এখনও ধীরগতি রয়েছে। এ সড়কে গণপরিবহন, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন দীর্ঘসময় থেমে থাকতে দেখা গেছে।

বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের ভোগান্তির কথা জানা গেছে। সোহেল রানা নামে একজন জানান, তিনি  বেসরকারি আইটি প্রতিষ্ঠান চাকরি করেন। কারওয়ানবাজার থেকে বাসে চড়ে উত্তরা বাসায় যাচ্ছেন। কিন্তু আদৌ কখন পৌঁছবেন বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, সকালেও অফিসে যেতে হয়েছে প্রচণ্ড যানজট সহ্য করে। সারাদিন কাজ করে বাড়ি ফেরার সময়ও যানজট। এতে করে সময় নষ্ট হয়, পরিবারকে সময় দেওয়া যায় না। শরীরেও অনেক ধকল যায়।

ফারুক আলম নামে এক পথচারী বাংলানিউজকে বলেন, সড়কে কেউ সিস্টেমই তো মেনে চলে না। এতেই যানজটের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া যারা গাড়ি চালায় তারা কোনো আইন মানে না। যে যেমন পারে তেমন করে আগে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত। যানজট নিরসনে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এটা সত্য যে সড়কের যানজট কমাতে রাস্তা অনেক প্রশস্ত করা হচ্ছে। কিন্তু এই কাজ করতেও অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। সব সময় আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তারাই ভুক্তভোগী।

নগরীর যাত্রী-পথচারী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ফুটওভার ব্রিজ থাকতেও পথচারীরা সেটি ব্যবহার করেন না। প্রাইভেটকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। সব মিলিয়ে রাজধানীতে সড়কের সংখ্যা বা শতকরা হার অনেক কম।

নাঈম নামে এক পথচারী বলেন, সরকার আইন করে দিলেও জনগণের পাশাপাশি আইন রক্ষাকারী বাহিনী সেটি অমান্য করেন। সড়কে গণপরিবহন দাঁড়ানোর কোনো সিস্টেম নেই। যান ব্যবস্থাপনা এতটই খারাপ; মানুষ চলবে কীভাবে? একটার পেছনে একটা বাস, তার পেছনে আরেকটা- লেগেই থাকে। রাস্তার মাঝ থেকে যাত্রী ওঠায়, আবার রাস্তার মাঝেই নামায়। লেগুনাগুলো যত্রতত্র পার্কিং করে রাখে। বাসগুলোও মূল সড়কে পার্কিং করে রাখা থাকে। এসব অব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা নেওয়ার মতো কারও চোখে পড়ে কিনা সন্দেহ আছে।

ট্রাফিক পুলিশ নিয়েও আপত্তি তোলেন তিনি। বলেন, তারা চেষ্টায় তাকে কোন মোটরসাইকেলকে ধরে জরিমানা করবে। কোথায় কোন পিকআপ, ট্রাক ধরবে। কিন্তু রাস্তায় বাস কীভাবে থামলো, কীভাবে যাত্রী ওঠাচ্ছে সেদিকে খেয়াল নেই। লেগুনার মতো অবৈধ যান চলাচলে বাধা নেই। অবৈধ ব্যাটারি চালিত রিকশা সড়ক থেকে তুলে দিতে ব্যবস্থা নেই। মূল সড়কে রিকশা বন্ধ করা নেই। রাত ১০টার জায়গায় ৮টায় ট্রাক নামে সেদিকে খেয়াল নেই। মূল সড়কে দূর পাল্লার বাসের সারি থাকে- সে দিকে কেউ নজর দেয় না। রাজধানীতে শান্তি নিয়ে কোনো মানুষ চলতে পারে না। এর সব দায়ভার ট্রাফিক বিভাগের।

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, আইন মেনে চলাচল করলে যানজট কম হবে। তা ছাড়া নগরীর এলাকার সড়কে নির্মাণ ও সংস্কার কাজ চরছে। যে কারণে যানজট বেশি হচ্ছে। সিগনাল ক্রসিংগুলোয় গণপরিবহনগুলো অনিয়ম মাফিক দাঁড়ানোয় অতিরিক্ত যানজট শুরু হয়। ট্রাফিক আইন মেনে চলা ও সড়কে যানজটের নিরসনে কাজ করছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। ভোর ছয়টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সদস্যরা সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু নগরীর মানুষ আইন মেনে চলেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২২
এসজেএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।