ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার ২ দিন পর জীবিত ফিরলেন বৃদ্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার ২ দিন পর জীবিত ফিরলেন বৃদ্ধ নদীতে ঝাঁপ দিচ্ছেন ভেঙ্কাটেশ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বন্যার পানিতে তেড়েফুঁড়ে উঠেছে নদী। অবস্থা বেগতিক দেখে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে সবাই। ব্যতিক্রম একজন। পানির ভয়ে পালিয়ে না গিয়ে উল্টো খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেলেন সবার চোখের সামনেই। দু’দিন আর কোনো খোঁজ নেই। এরপর হুট করেই সবাইকে অবাক করে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন ওই ব্যক্তি।

সম্প্রতি ভারতের কর্ণাটকে ঘটেছে চমকপ্রদ এ ঘটনা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে কাবিনি জলাধারের গেট খুলে দেওয়ায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় রাজ্যের নানজাংগুড এলাকা।

এর মধ্যেই গত শনিবার (১০ আগস্ট) ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নদীতে ঝাঁপ দেন ৬০ বছর বয়সী ভেঙ্কাটেশ মুর্থি।

তার নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমগুলোতে। অনেকেরই ধারণা ছিল, তিনি আর বেঁচে নেই। সংবাদমাধ্যমগুলোও তার নাম বন্যায় মৃতের তালিকায় যোগ করে দিয়েছিল।

সবাই যখন ধরেই নিয়েছে, ভেঙ্কাটেশ আর বেঁচে নেই, তখন গত সোমবার (১২ আগস্ট) সুস্থ-সবল অবস্থায় বাড়ি ফিরেছেন তিনি। সত্যতা নিশ্চিত করতে হাজির হয়েছেন স্থানীয় থানাতেও।

বৃদ্ধের ফিরে আসা সবার আছে আশ্চর্যজনক হলেও, অবাক হননি একজন। তার বোন মনজুলা।

তিনি বলেন, ভেঙ্কাটেশের নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত ২৫-৩০ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে আসছেন।

ভাইয়ের ফিরে আসার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও দু’দিন পার হয়ে যাওয়ায় কিছুটা চিন্তাও হচ্ছিল তার। বলেন, নিরাপদে ফিরে আসতে তার (ভেঙ্কাটেশ) কখনো আধা ঘণ্টার বেশি লাগেনি। কিন্তু, এবার ব্রিজের পিলারে আটকে গিয়ে দুই দিন লেগে গেছে।

জানা যায়, গত শনিবার (১০ আগস্ট) ভেঙ্কাটেশ মুর্থিকে হেজ্জিজ ব্রিজ থেকে লাফ দিতে দেখেন স্থানীয়রা। তারা দ্রুত দড়ি ছুঁড়ে তাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, প্রবল স্রোতে চোখের নিমিষে তলিয়ে যান ওই বৃদ্ধ।

সবাইকে চমকে দেওয়া ভেঙ্কাটেশ বলেন, আমি সাধারণত পিলারের মাঝ বরাবর সাঁতার কাটি। কিন্তু এবার স্রোত খুব বেশি থাকায় ব্রিজের পিলার ধরতে যাই। এটাই ছিল সবচেয়ে বড় ভুল। সেখানকার আগাছায় আটকা পড়ি আমি।

‘কিন্তু কোনোমতে ব্রিজের একটি কুঠুরিতে উঠতে পারি। সেখানে প্রায় ৬০ ঘণ্টা আটকা ছিলাম। পরে, বন্যার জোর কিছুটা কমলে বেরিয়ে আসি। ’

বয়স হলেও ভেঙ্কাটেশের গায়ের জোর কমেনি। তারচেয়েও বেশি আছে মনের জোর। সাইকেল চালিয়ে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারি পর্যন্ত ভ্রমণ করেছেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, গত কয়েকদিনে কর্ণাটকে বন্যায় অন্তত ৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত চার লাখ মানুষকে। তবে, দু’দিন থেকে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।