ঢাকা, বুধবার, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১১ জুন ২০২৫, ১৪ জিলহজ ১৪৪৬

মুক্তমত

কীসের ভিত্তিতে এপ্রিলে নির্বাচন, ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য

অদিতি করিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:০৩, জুন ১০, ২০২৫
কীসের ভিত্তিতে এপ্রিলে নির্বাচন, ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য অদিতি করিম, ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহার আগের দিন সবাই ব্যস্ত শেষ মুহূর্তে কোরবানির পশু কেনাকাটার জন্য। কেউ কেউ ঘরের টানে বাড়িতে ফিরছেন তীব্র যানজট উপেক্ষা করে।

 

ঠিক এ রকম সময় সন্ধ্যা সাতটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা সবাই ভেবেছিলাম ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য প্রধান উপদেষ্টা হয়তো এই সময়টিকে বেছে নিয়েছেন। তিনি দেশের অভিভাবক। কাজেই ঈদের আগে দেশের মানুষকে তিনি শুভেচ্ছা জানাবেন এটাই স্বাভাবিক।  

কিন্তু এই ভাষণটি হয়ে গেল একটি নীতি নির্ধারণী ভাষণ। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিলেন। বললেন, এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হঠাৎ করে ঈদের আগের দিন প্রধান উপদেষ্টার এই নির্বাচনের সময় ঘোষণার কারণ কি তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে।  

কারণ যে সময় তিনি নির্বাচনের সময় ঘোষণা করলেন ঠিক সেই সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা চলমান। এই আলোচনা ঈদের পরে অব্যাহত থাকবে বলেও প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকেই ঘোষণা করা হয়েছিল। মাত্র কদিন আগে প্রধান উপদেষ্টা সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করেছিলেন। সেই আলোচনার শুরুতে তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরেকটু দূরত্ব কমিয়ে নিয়ে এসে একটি জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার পর আমরা নির্বাচনের পথে হাঁটব। ’ কিন্তু আলোচনার মাঝ পথে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা দেশকে এক বিভ্রান্তির দিকে নিয়ে গেল।  

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐক্যের ওপর জোর দিচ্ছেন। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংস্কার করতে চান বলেও একাধিকবার জাতিকে জানিয়েছেন। এ লক্ষ্যেই তিনি প্রথমে অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছিলেন। সেই সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা হাতে নিয়ে একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করেন। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো সিরিজ বৈঠক করে এবং সেই বৈঠকে বেশ কিছু মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত পোষণ করে। কিছু কিছু বিষয়ে তাদের মধ্যে আংশিক দ্বিমত এবং কয়েকটি বিষয় পুরোপুরি দ্বিমত ছিল। এরকম অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষায় সবাইকে আরেকটু কাছাকাছি আনার জন্যই দ্বিতীয় দফার সংলাপ উন্মুক্ত করা হয়েছিল। সেই সংলাপের মাঝ পথে কি এমন জরুরি প্রয়োজন হলো যে প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হলো? রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চূড়ান্ত ফয়সালা না করে মাঝ পথে নির্বাচনের ঘোষণা জাতীয় রাজনীতিতে অনৈক্য, বিভেদ তৈরি করলো।  

সর্বশেষ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে দেশের দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সমস্ত রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা তুলে ধরেছিল। প্রধান উপদেষ্টা তাদের বক্তব্য শুনেছেন, হেসেছেন। তিনি নিজে তার অবস্থান ব্যক্ত করেননি। উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবাই আশাবাদী ছিলেন যে সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ঐকমত্যের ভিত্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটি সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করবেন। ২০০৯ এর পর থেকে দেশে কোনো নির্বাচন হয় না। এ রকম একটি বাস্তবতায় সারা দেশের মানুষ মুখিয়ে আছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। সেই নির্বাচন হতে হবে উৎসবমুখর এবং সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। আর সেজন্যই সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত হওয়া উচিত। এক তরফাভাবে প্রধান উপদেষ্টা এই নির্বাচনের তারিখ কেন ঘোষণা করলেন? 

দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়। সশস্ত্র বাহিনী আগামী জানুয়ারিতে দেশে একটি নির্বাচিত সরকার দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। এ নিয়ে সেনাপ্রধান একাধিকবার কথা বলেছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল এবং সশস্ত্র বাহিনী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সবার মতামতকে অগ্রাহ্য করলেন।

এখন আসা যাক প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে যে নির্বাচনের কথা বলেছেন, তা কতটা বাস্তবসম্মত? বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসগুলো যদি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তাহলে দুটি নির্বাচন ছাড়া সব নির্বাচন হয়েছে অক্টোরব থেকে মার্চের মধ্যে। বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তৃতীয় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৬ সালের ৭ মে। চতুর্থ জাতীয় নির্বাচন হয় ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ। পঞ্চম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ষষ্ঠ জাতীয় নির্বাচন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০১ সালের ১ অক্টোবর। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ এবং ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের জন্য এপ্রিল, মে, জুন মাস নির্বাচনের উপযুক্ত সময় নয়। আমরা যদি ২০২৬ এর এপ্রিলের নির্বাচন কতটা বাস্তবসম্মত সেটি বিচার করে দেখি, তাহলে দেখব যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি শুরু হবে পবিত্র রমজান। রমজান ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য সংযমের মাস। এই সময় নিশ্চয়ই কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনী প্রচারণায় যাবে না। ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে অর্থাৎ ১৮ বা ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত দেশ একটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে থাকবে। এই অবস্থায় এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন করা কি আদৌ সম্ভব? এপ্রিলের শুরুতেই দেশে পাবলিক পরীক্ষা থাকে। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা হয় এই সময়টাতে। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার যে কাঠামো তাতে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় বিপুল শিক্ষার্থী, অভিভাবক পরীক্ষার কারণে ব্যস্ত থাকে। সবচেয়ে বড় কথা হলো পরীক্ষার সময় দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরীক্ষা নিতে ব্যস্ত থাকে। আর আমাদের ভোট গ্রহণের প্রধান কার্যক্রম পরিচালিত হয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এখানেই ভোট কেন্দ্র তৈরি করা হয়। তাহলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কীভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে? আমরা ধরে নিলাম পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়। এই সময় আবহাওয়া থাকে বৈরী। ঘূর্ণিঝড়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এপ্রিল মাসের একটি নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র। তাহলে প্রধান উপদেষ্টা কিসের ওপর ভিত্তি করে এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন? 

আমরা দেখি যে এ ধরনের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার ক্ষেত্রে কতগুলো রীতি রেওয়াজ প্রচলিত আছে। নির্বাচনের সময়সীমা চূড়ান্ত করার আগে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি যারা পালন করবে সেই নির্বাচন কমিশনকে ডাকা হয়। তাদের প্রস্তুতি, মতামত ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করা হয়। এ ক্ষেত্রে তাদের মতামত গ্রহণ করতে হয়। কারণ শেষ পর্যন্ত কাজটি নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনের সাথেও এ নিয়ে কোনো কথাবার্তা বলেননি।  

এবার আসা যাক যে এপ্রিল মাসে নির্বাচনের কথা প্রধান উপদেষ্টা কেন বললেন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ রাজনৈতিক দল বলছিল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব। কেন, কীভাবে সম্ভব তার বিশদ ব্যাখ্যাও তারা দিয়েছেন। এই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান বক্তব্য ছিল, দীর্ঘদিন ধরে একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের সংকট বাড়বে, অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বাড়বে। তারা এটাও বলেছিলেন যে দেশের অবস্থা এমনি ভালো নয়। চারিদিকে বিশৃঙ্খলা অরাজকতা এবং মব সন্ত্রাস চলছে। ব্যবসা বাণিজ্য, অর্থনীতি রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এর প্রধান কারণ হলো দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। একটি অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সাধারণ মানুষ আস্থা রাখতে পারছেন না। এ রকম বাস্তবতায় তারা একটি নির্বাচিত সরকারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। অন্যদিকে জামায়াত নির্বাচনের ব্যাপারে একটি মধ্যবর্তী অবস্থানে ছিল। তারা ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা, জুলাই গণহত্যার বিচারকে দৃশ্যমান করা এবং একটি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার পর জাতীয় নির্বাচন হতে পারে।  

অন্যদিকে সদ্য গঠিত ছাত্রদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনের ব্যাপারে একটি অস্পষ্ট এবং ধোঁয়াশাচ্ছন্ন অবস্থান প্রকাশ করছে সব সময়। নির্বাচনের আগে তারা নির্বাচন কমিশন সংস্কারের কথা বলছেন। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠনের দাবিতে তারা নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন মাত্র কদিন আগে। তারা বর্তমান সংবিধান বাতিল চেয়ে নতুন সংবিধান চেয়েছেন, যা বর্তমান কাঠামোতে অসম্ভব। এনসিপি প্রথমে একটা গণ পরিষদ নির্বাচনের দাবি করেছেন। তারপর তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলেছেন। এটি সবাই অনুধাবন করে যে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই দাবিগুলোর বাস্তব ভিত্তি খুবই কম। দাবির চেয়ে এটি তাদের আকাঙ্ক্ষা হিসেবেই বিবেচনা করা যায়। কাজেই এটি বলা যায় যে দেশের সব রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচনের ব্যাপারে একমত। এখন প্রধান উপদেষ্টার যদি এ ব্যাপারে ভিন্ন কোনো মত থাকে, তাহলে সেই ভিন্নমত অবশ্যই তিনি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা করতে পারেন। তিনি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্তি দিয়ে কথা বলতে পারেন। যুক্তির নিরিখে তিনি তার মতামত অন্যদের বোঝাতে পারেন। আর যদি সেটি না পারেন, তাহলে সব রাজনৈতিক দলের মতামতকে তার শ্রদ্ধা জানাতে হবে এবং সেই মতামত মেনে নিতে হবে। এটাই গণতান্ত্রিক রীতি।  

কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা একতরফাভাবে এপ্রিলে নির্বাচনের ঘোষণা করলেন। আমরা যদি লক্ষ্য করি, তাহলে দেখব যে একমাত্র জামায়াত ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এপ্রিলে নির্বাচন চায়নি। এমনকি এনসিপিও এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলেনি। যদিও প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণার পর এনসিপি বলেছে যে এই সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা এবং বিচার সম্পূর্ণ হলে নির্বাচনে তাদের আপত্তি নেই। এনসিপি কি তাহলে তাদের অবস্থান থেকে সরে এলো নাকি প্রধান উপদেষ্টা যা বলবেন সেটি মেনে নেওয়াই তাদের রাজনীতির অংশ? তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি ছিল যে তারা সরকারের আস্থাভাজন এবং সরকারের অনুগ্রহে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের বিকশিত করছেন, সেই অভিযোগটি সত্য প্রমাণিত হচ্ছে? এমন নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা এই নির্বাচনের ঘোষণার মাধ্যমে। রাজনৈতিক অনৈক্যের দরজা খুলে দিয়েছেন। এর ফলে এখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ঐক্যের অবস্থান থেকে একটি বিভক্তির অবস্থা তৈরি হয়েছে। অথচ এমনটি কথা ছিল না। প্রধান উপদেষ্টার তার ভাষণে আরও অনেকগুলো বিষয় আছে। যখন তিনি চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কথা বললেন, তখন মনে হলো যে তিনি এই বিষয়টি জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়েছেন। এমনকি তিনি এটিও বলেছেন যে যারা এই ধরনের পদক্ষেপে বিরোধিতা করছেন তাদের প্রতিহত করতে হবে। এ রকম ভাষা প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে জাতি আশা করে না। তার শব্দ চয়ন যারাই লিখে দিক না কেন, সঠিক হয়নি। সব কিছু মিলিয়ে ৬ জুন জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ জাতিকে বিভক্ত করেছে। তবে আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এটাই চূড়ান্ত নয়। এ নিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চয়ই একটি সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে। বিশেষ করে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন বৈঠকটি হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট।

অদিতি করিম, নাট্যকার ও কলাম লেখক

ইমেইল: [email protected]

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।