ঢাকা: একটি বল যেমন পুরো ম্যাচের ফল পাল্টে দিতে পারে তেমনি একটি ম্যাচের জয় কিংবা হার পাল্টে দেয় পুরো সিরিজের পরিকল্পনা। যার ফলে আঁকতে হয় নতুন নকশা।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সিরিজ নিশ্চিত করতে মরিয়া ছিল দক্ষিণ আফ্রিকানরা। কিন্তু এ যেন দাঁতের বদলা দাঁত! প্রথম ওয়ানডেতে আট উইকেটে জয় পাওয়া প্রোটিয়াদের একদিন পরেই দেখতে হয় টাইগারদের সাত উইকেটের জয়। তাই সফরকারীরা বন্দরনগরীতে খুব নির্ভাবনায় আছে এ কথা একদম বলা যাবে না।
নির্ভাবনার প্রশ্নই আসে না। কারণ কিছুদিন আগেই গঙ্গার দেশের ক্রিকেট দলের পদ্মার দেশে সিরিজ হারের লজ্জায় স্নাত হতে দেখে বাংলা মুলুকে পা রাখেন দক্ষিণ আফ্রিকানরা। ভারত বধের আগে পাকিস্তান এবং জিম্বাবুয়ের বাংলাওয়াশ হওয়ার খবরটাও তো ছড়িয়ে গিয়েছিল বিশ্ববাতাসে।
শেষ দিনের হিসাব নিকাশে এক সুতো ভুলের জন্যও চরম মূল্য দিতে হবে প্রোটিয়াদের। অন্যদিকে, আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা টাইগাররা সিরিজ নিজেদের করে নিতে পাক্কা হিসেব নিতে ছাড়বেন না।
সমতায় ফেরার ম্যাচে টাইগার বোলাররা শতভাগ দায়িত্ব পালন করেছেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়ে রুবেল হোসেন যেভাবে হাশিম আমলার স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিলেন তা বহুদিন মনে থাকবে টাইগার সমর্থকদের। পরের ম্যাচেও তাই আক্রমণাত্মক তকমাটা লেগে থাকবে রুবেলের চোখে মুখে।
এদিকে নাসিরের জাদু তো চলছেই। তিনি গত ম্যাচে করেছেন তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। প্রোটিয়া শিবিরে সবচেয়ে বেশি বিরাজ করছে মুস্তাফিজ আতঙ্ক। প্রথম ম্যাচ দেখে শুনে পার করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে মুস্তাফিজের থাবায় ঘায়েল তিন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান।
উইকেট না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে রান দিতে অনেকটাই কৃপণ ছিলেন বিশ্বসেরা সাকিব আল হাসান। বোলিং ডিপার্টমেন্টের সুসংহত এ অবস্থায় দলনেতা মাশরাফির নেতৃত্বে বোলাররা আরও একবার জ্বলে উঠলে ধসে যেতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন আপ।
ছন্দে থাকা সৌম্য সরকারের ব্যাটিংও প্রোটিয়াদের মাথা ব্যাথার আরেকটি কারণ হয়ে উঠতে পারে। ভালো বল বেছে শট বের করে নিতে জুড়ি নেই তার। মন স্থির রেখে তিনি খেলেন নিঃসঙ্কোচে। বাউন্সার থেকে শুরু করে খাটো লেন্থের ডেলিভারি সামলানোতেও মুন্সিয়ানা রয়েছে তার।
সেই সঙ্গে প্রস্তুত বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি হাঁকানো মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। যিনি গত ম্যাচে দলের হাল ধরেছিলেন শক্ত হাতে। এদিকে ব্যাটিং ফর্মটা মন্দ না সাকিবেরও। তাই সিরিজ বাঁচানোর শেষ দিনে দুই দল লড়বে সমানে সমান।
যেকোনও দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলতে পারে নিজেদের সেরা খেলা। অন্যদিকে, ঘরের মাটিতে কোনও ছাড় দিতে রাজি নয় বাংলাদেশ। পুরোনো ধারাবাহিকতায় জিম্বাবুয়ে, পাকিস্তান এবং ভারতের পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ নিজেদের করে নিতেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
আরেকবার তাই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার আপেক্ষা। এ কথা কারো অজানা নয় যে, উত্তেজনার ম্যাচে তালগোল পাকানো প্রোটিয়াদের স্বভাব। এর সঙ্গে যদি যোগ হয় বাঘ আতঙ্ক তবে বাড়তি সুযোগ থেকে যায় বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৫
এসইউ