ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘দেশের মানুষ বৈষম্য ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
‘দেশের মানুষ বৈষম্য ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়’

ঢাকা: জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, আমরা দেশের মানুষের মুক্তির জন্য রাজনীতি করছি। আমরা দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে চাই।

দেশের মানুষ বৈষম্য ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কেটে নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।  

জি এম কাদের বলেন, দীর্ঘকাল দেশের সাধারণ মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। জমিদার ও রাজারা সাধারণ মানুষকে মানুষ বলেই গণ্য করেনি। এমন বৈষম্য ছিল সাধারণ মানুষকে জুতা পায়ে হাঁটতে দেয়নি এমনকি গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও সাধারণ মানুষকে হাঁটতে দেওয়া হতো না। বিভিন্নভাবে মানুষ নিগৃহীত হয়েছে, বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পাকিস্তান আমলেও আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিলাম। ভালো করলেও বাঙালিদের চাকরি দেওয়া হতো না, প্রমোশন দেওয়া হতো না বাঙালিদের। সেনাবাহিনীতে বাঙালিদের প্রমোশন দেওয়া হতো না। সুশাসন ছিল না, আইনের শাসন ছিল না। আমাদের হেয় করে দেখা হতো, অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। দেশের মানুষ বিভিন্ন সময়ে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই মুক্তি সংগ্রাম একাত্তরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ স্বাধীন হয়েছে, একটি ভূখণ্ড ও পতাকা পেয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। সেই স্বাধীনতার স্বপ্ন ও চেতনা কী বাস্তবায়ন হয়েছে? দেশের মানুষ কী বৈষম্য, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছে? দেশের মানুষ কাঙ্ক্ষিত মুক্তি পায়নি। দেশের মানুষ যে মুক্তির জন্য দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রাম করেছে সেই মুক্তি পায়নি সাধারণ মানুষ। এখনও দুঃশাসন থেকে মুক্তি পায়নি দেশের মানুষ।  

তিনি বলেন, এখনও দেশের মানুষের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা দল করে তাদের অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি দলের উপজেলা পর্যায়ের নেতারা হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন। তাদের দেশে টাকা রাখার জায়গা নেই, তারা বিদেশে টাকা পাচার করছে। সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করছে, তাদের চাঁদাবাজি থেকে ভিক্ষুকও রেহাই পায় না। দেশে আইনের শাসন নেই, দেশের মানুষের ধারণা আইন নিজের গতিতে চলতে পারছে না। ভালো মানুষ সমাজে টিকতে পারছে না। ভালো মানুষরা সন্তানদের বিদেশ পাঠিয়ে দিতে চেষ্টা করছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ ইউরোপ-আমেরিকায় যেতে আবেদন করেছে। সাধারণ মানুষ নিজ দেশকে নিরাপদ মনে করছে না। আইন-শৃখলা রক্ষা বাহিনীকে আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছি না। বৈষম্যহীন ও ন্যায় বিচারভিত্তিক একটি সমাজ গঠন হয়নি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত করবে না জাতীয় পার্টি। দেশের মানুষ জি এম কাদেরকে বিশ্বাস করে। দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে তার দিকে। তাই মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমরা কখনোই পিছ পা হবো না। দেশের মানুষের ভালোবাসা অর্জনের জন্যই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।  

এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান দলের নেতাকর্মীদের জন্য শীতল ছায়া। দলের নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছেন।  

অনুষ্ঠানে কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, জাতীয় পার্টি হচ্ছে গণমানুষের আস্থার রাজনৈতিক শক্তি। দেশের মানুষ এখনও পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার কথা স্মরণে রেখেছে।  

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম বলেছেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। জি এম কাদেরের নির্দেশনায় দেশের মানুষের কল্যাণে জাতীয় পার্টির রাজনীতি এগিয়ে নেব।  

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরিফা কাদের বলেছেন, দেশ ও মানুষের জন্য জাতীয় পার্টির রাজনীতি। মানুষের কল্যাণের জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান রাজনীতি করছেন। তাই দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর জন্য দোয়া কামনা করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
এসএমএকে/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।