ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় ঘনিয়ে এসেছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
‘চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় ঘনিয়ে এসেছে’

ঢাকা: চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় ঘনিয়ে এসেছে উল্লেখ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নানামুখী চাপে পিষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার এখনই সময়। গণতন্ত্র মঞ্চ সেই লক্ষেই অগ্রসর হচ্ছে।

সরকার এবং শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের এক দফা দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের এ লড়াই অব্যাহত থাকবে৷

শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৪টায় এক দফা যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চের গণমিছিল পূর্ববর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

গত ২৯ জুলাই অবস্থান কর্মসূচিতে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর সরকারি দলের ক্যাডারদের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে নেতারা বলেন, পুলিশ এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি বরং বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিরোধী দলগুলোর শতাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। বিরোধী নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে শত শত নেতা কর্মীকে জেলে পাঠাচ্ছে।

নেতারা বলেন, হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার, নির্যাতন করে অবৈধ সরকার গদি রক্ষা করতে পারবে না। স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় দিতে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। নেতাদের চলমান গণআন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানের পথে নিয়ে যেতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে গণমিছিল পূর্ববর্তী  সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রা্ষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এড হাসনাত কাইয়ূম ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহ-সভাপতি মিসেস তানিয়া রব।

সভাপতির বক্তব্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার ও সরকারি দল পুরোপুরি দেউলিয়া বলেই তাদেরকে বিরোধীদলের লেজুড়বৃত্তি করতে হচ্ছে, বিরোধী দলের পেছনে পেছনে হাঁটতে হচ্ছে।  
তিনি বলেন, সরকার ও সরকারি দল দেশের জনগণের সব অধিকার হরণ করেছে। সারা পৃথিবী অগণতান্ত্রিক এ সরকারকে ধিক্কার জানাচ্ছে। কিছু লোকের পকেট ভরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে চায়। ক্ষমতায় থাকতে কে কার পা ধরছে, তা জনগণ দেখছে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ১৫ বছর ধরে অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকার অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন চালিয়েছে। গুম, ক্রসফায়ার, মামলা, গ্রেপ্তার করে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন করেছে। লুটপাট, দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে তারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। এখন সেসব তথ্য বের হয়ে আসছে। এরা কেউ ছাড় পাবে না। অবৈধ ভোট ডাকাত সরকার মুখে গণতন্ত্র আর সংবিধানের কথা বললেও বাস্তবে তারা মানুষের ভোটের অধিকারসহ সব গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকার দলীয়দের হামলা আক্রমণ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসেরই নমুনা। নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আতঙ্ক থেকেই  তারা দমন নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের পথ গ্রহণ করেছে। এসব মোকাবিলা করেই দেশের মানুষ এবার নিজের অধিকার ও মুক্তি অর্জন করবে। এ সরকার এখন পুলিশ নির্ভর হয়ে দমন নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকার সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এ সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছে৷ এদের পায়ের তলায় মাটি নেই। স্বৈরাচার, ভোট ডাকাত, অগণতান্ত্রিক সরকারের দিন শেষ। তাদের পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। পালানোর জন্য জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে যে সাম্রাজ্য গড়েছিল তারা, সে সাম্রাজ্য এখন হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকার দেশটাকে মগের মুল্লুক বানিয়েছে। দেশের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার ঢাল হিসেবে সংবিধান সংশোধন করে একটি একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করেছে। এ সরকারের অপসারণের পাশাপাশি রাষ্ট্রের সার্বিক সংস্কার করা না হলে আবারও দেশে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। এখন প্রয়োজন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অপসারণ এবং সংবিধান ও শাসনব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহ-সভাপতি মিসেস তানিয়া রব বলেন, অতীতের স্বৈরশাসকেরা যেভাবে বিদায় নিয়েছে বর্তমান স্বৈরশাসককেও জনগণ সেভাবে বিদায় দেবে। তিনি পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক করে গণবিরোধী সরকারের সহযোগী না হয়ে জনগণের কাতারে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। জনগণের ভোটের অধিকার হরণকারী এই সরকার গণ আন্দোলনকে ভয় পেতে শুরু করেছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই তারা বেসামাল হয়ে উঠছে। দেশের মানুষ এবার পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রাজপথে নেমেছে এবার তারা তা বাস্তবায়ন করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
এমকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।