ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মিয়ানমার ইস্যুতে সরকার কথা বলতেও ভয় পাচ্ছে: ফখরুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
মিয়ানমার ইস্যুতে সরকার কথা বলতেও ভয় পাচ্ছে: ফখরুল

ঠাকুরগাঁও: মিয়ানমার ও সেন্টমার্টিন ইস্যু বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আসছে, মিয়ানমানের ছোড়া গুলিতে মানুষ মারা যাচ্ছে, কিন্তু সরকার কিছুই করছে না। এই দুর্বল ও নতজানু সরকার বিদেশের ওপর নির্ভর করেই টিকে আছে।

সেকারণে একটা কথা পর্যন্ত বলতে পাছে না তারা।

রোরবার (১৬ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।  

সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান অনির্বাচিত দখলদার সরকারের কাছে সার্বভৌমত্বের ব্যাপার কোনো প্রভাব বিস্তার করছে না। একটা ভিন্ন দেশের সাথে দেশের স্বীকৃত যে পথ, সেই সমুদ্র পথে আমরা যাতায়াত করতে পারছি না। সেখানে গোলাগুলি করে পথ বন্ধ করে দিচ্ছে, অথচ সরকার এখন পর্যন্ত কোনো স্টেটমেন্ট ও মিনয়ামারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। তারা শুধু বলছেন, আমরা দেখছি কিন্তু এ বিষয়ে তারা এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে কোনো আলোচনাও করেনি।

তিনি বলেন, জনগণ আশা করে দেশের সার্বভৌমত্ব সরকার রক্ষা করবে। সেখানে সরকারের কোনো রকম কথাই আমরা শুনতে পাচ্ছি না। তাই আমরা মানে করি, এই ইস্যুতে নতজানু সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।

কোরবানির ঈদের প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, মুদ্রাস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, মানুষ কোরবানির ঈদের পশু কিনতে যাচ্ছে কিন্তু দাম বেশির কারণে অনেকে পশু কিনতে পারছে না। ঢাকার পশুর বাজারগুলোতে কোনো লোকই নেই। এর কারণ হচ্ছে মানুষের আর্থিক অবস্থা চরমভাবে খারাপ হয়েছে। এই সরকার দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো লুট করে শেষ করে দিয়েছে এবং অর্থনীতিকে চরম খারাপ অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে সমস্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে লুটপাট করে টিকে থাকতে পারবেন, আসলে টিকে থাকতে পারছেন না। আজিজ ও বেনজীর তার প্রমাণ। লুট করলে, চুরি করলে এবং অন্ধের মতো অজনপ্রিয় সরকারকে সমর্থন করলে টিকে থাকা সম্ভব না। এই সরকারই তাদের বলির পাঠা বানিয়েছে। এছাড়াও সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার বিষয়ে পত্রিকায় তার বিশাল নিউজ বেড়িয়েছে। এখন থলের বিড়াল একেক করে সব বেরিয়ে আসছে। আমরা বহুদিন ধরেই বলে আসছি, এই সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে, সরকারি কর্মকর্তাদের চুরির সুযোগ দিচ্ছে। সেই সুযোগ দিয়ে দিয়ে আজকে এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। এখন কোনকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, একটা ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয় না। যদি সেটা হতো তাহলে এদেশ স্বাধীনতা হতো না, রাষ্ট্রভাষাও বাংলা হতো না। বিএনপির আন্দোলন হয়তো সাময়িকভাবে সরকারের দমননীতির কারণে স্তিমিত হয়েছে। কিন্তু আন্দোলন চলমান আছে ও বেগবান হবে। মূলত রাজনৈতিক দলের পরিবর্তন হয় একটা দলকে শক্তিশালী করার জন্য। আমাদের অনেকে মারা গেছেন, অনেকে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে যে পদগুলো শূন্য ছিল সেই পদগুলো পূরণ করা হয়েছে। এতে আমরা আশাবাদী, এই পরিবর্তনে দল আরও শক্তিশালী হবে।

এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীর উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।