ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে বাংলাদেশে আধিপত্য কায়েম করতে চায় ভারত: রিজভী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২৪
সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে বাংলাদেশে আধিপত্য কায়েম করতে চায় ভারত: রিজভী

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারতের বিদ্বেষপূর্ণ ও হিংসাত্মক মনোভাবের কারণে আজকে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ তাদের সঙ্গে নেই। আর পাকিস্তান তো আগে থেকেই নেই।

শুধুমাত্র অহংকার এবং একের পর এক শোষণের কারণে ভারতের আজকে এ অবস্থা।

সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে কট্টর হিন্দুবাদীদের উসকে দিয়ে বাংলাদেশে আধিপত্য কায়েম করতে চায় ভারত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে আপনারা ভারতকে যেমন বিভাজন করছেন, ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে গণতন্ত্রের যে একটি ঐতিহ্য ছিল এটাকেও ভূলুণ্ঠিত করেছেন আর সে সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে কট্টর হিন্দুবাদীদের উসকে দিয়ে আপনারা চাচ্ছেন বাংলাদেশে আপনাদের আধিপত্য কায়েম করতে।  

শুক্রবার(৬ ডিসেম্বর) দুপুরে  রাজধানীর গুলশানে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আমরা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি। এ জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে ৩০ লাখ মানুষের আত্মদানের মধ্য দিয়ে ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে। ১৮ কোটি ১৯ কোটি মানুষের এ দেশকে আপনারা চোখ রাঙিয়ে ভয় দেখিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার দিয়ে দাবিয়ে রাখতে পারবেন? হঠাৎ আপনাদের কি হলো পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে উঠেপড়ে লেগেছেন। ৫ আগস্টের আগে এ দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল ঘৃণিত একটি সরকার। এরা ক্ষমতায় থাকার জন্য নিজ দেশের সন্তানদেরকে হত্যা করতে দ্বিধা করতো না, এরা নিজ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষদের চিরদিনের জন্য নিরুদ্দেশ করতে দ্বিধা করতো না। এরা ক্রসফায়ার দিয়ে নদীর ধারে খালের ধারে মানুষদেরকে নির্দ্বিধায় হত্যা করতো। সে হাসিনা সরকার আপনাদের এত প্রিয় ছিল কেন? কারণ আপনাদের সাহসে আপনাদের উসকানিতে শেখ হাসিনা যা ইচ্ছা তাই করে গেছে এ দেশে।

তিনি আরও বলেন, তাদের ভোটের দরকার হতো না, শেখ হাসিনার অধীনে যে ভোটগুলো হয়েছে সে ভোটগুলো হয়েছে ভোটারবিহীন। যে ভোটের এক একটা নাম আছে ভোটার শূন্য ভোট, মিডনাইট ভোট আরও অনেক কিছু।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, আপনারা মনে করছেন আপনারা পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ তরকারিতে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারবে না। আপনারা রসুন, আদা সয়াবিন তেল বন্ধ করে দিলে আমরা এগুলো আর রান্নায় ব্যবহার করতে পারবো না, আপনারা দুঃস্বপ্ন দেখছেন। আপনারা গরু রপ্তানি পাঁচ ছয় বছর ধরে বন্ধ করে দিয়েছেন,বাংলাদেশের মানুষ গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে তারা গরুর খামার, ছাগলের খামার গড়ে তুলে এক কোরবানি ঈদেই এক কোটি ২০ লাখ গবাদি পশু জবাই হয়।

রিজভী বলেন, আপনারা ভুলে যাবেন না বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত শ্রম প্রিয়, কষ্ট প্রিয় পেঁয়াজ রসুন আদা তারা নিজেরাই উৎপাদন করতে জানে। আপনারা মনে করেন আপনারাই শুধু একটি দেশ আছে পৃথিবীতে। আর কি দেশ নেই পৃথিবীতে যাদের কাছ থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করতে পারব যাদের কাছ থেকে আমরা রসুন তেল আমদানি করতে পারবো। সেসব দেশ কি নেই? আপনারা মনে করেছেন এগুলো বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা খারাপ হবে। এ জাতিকে আপনি (ভারত) ভয় দেখিয়ে আপনাদের নতজানু করবেন সে জাতির দেশ বাংলাদেশ নয়।

তিনি আরও বলেন, রিপাবলিক বাংলা বলেছে চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ হিসেবে দাবি করা হয়েছে আরও কত মিথ্যা অপপ্রচার চলছে। আমরা বলছি একটি স্বাধীন সার্বজনীন দেশে আপনারা দাবি করলে আমি আগেও বলেছি আমরাও আমাদের নবাবের এলাকা ওই বাংলা বিহার উড়িষ্যা আমরা দাবি করবো। এটা তো আমাদের ন্যায্য পাওনা। এ কথাগুলো আমরা বলতে চাই না। অনেক সংগ্রাম আন্দোলন ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রাম এ উপমহাদেশে আমরা একসঙ্গে করেছি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবির, ছাত্রদল নেতা তৌহিদ আওয়াল ও রাজু আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২৪
টিএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।